এনডিটিভি: রাশিয়া ও ন্যাটো-জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার জেরে ইউরোপ সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। মেট্রোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালগুলোকে ২০২৬ সালের মধ্যে সম্ভাব্য ‘বড় ধরনের কর্মকাণ্ডের’ জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, গত ১৮ জুলাই একটি বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে ফ্রান্সের প্রশাসন তাদের দেশের হাসপাতালগুলোকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। যাতে বড় আকারের কোনও সংঘাতের ঘটনা ঘটলে আহত ফরাসি ও বিদেশি সৈন্যদের চিকিৎসা দেয়া যায়।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রক মনে করছে, দেশের মাটিতে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং এমন পরিস্থিতিতে আহতদের সেবা দেয়ার জন্য হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এমনকী ফ্রান্স সরকারও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মনে করছে যে, তাদের দেশ বড় আকারের সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। তাই যুদ্ধের সময় ফরাসি এবং বিদেশি আহত সৈন্যদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা জরুরি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফ্রান্সে এমন চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করা হবে যা দুই মাসের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ সময়কালে-তিন দিনের জন্য প্রতিদিন ২৫০ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করতে পারে। সশস্ত্র সংঘাত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অন্যান্য জরুরি অবস্থা থেকে নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য ৬৩টি ব্যবস্থা সম্বলিত ২০ পৃষ্ঠার একটি ম্যানুয়াল তৈরি করা হয়েছে। এই নির্দেশিকাটিতে পানি, টিনজাত খাবার, ব্যাটারি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার কিটসহ প্রয়োজনীয় সরবরাহের তালিকা রয়েছে।
সরকার জোর দিয়ে বলেছে যে ২০২২ সাল থেকে তৈরি এই ম্যানুয়ালটি একটি সাধারণ প্রস্তুতি ব্যবস্থা। প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক জেনারেল সেক্রেটারিয়েট নাগরিকদের বিভিন্ন সংকটের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করার জন্য এই ম্যানুয়াল তৈরি করেছে। এতে পারমাণবিক আক্রমণ মোকাবেলা এবং স্থানীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগদানের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশিকা প্রকাশের ফলে জল্পনা শুরু হয়েছে যে ফ্রান্স অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রতি সাড়া দিচ্ছে, কারণ দেশটি তার প্রতিরক্ষা ব্যয়ও তার অর্থনৈতিক উৎপাদনের ২% থেকে ৩-৩.৫% বৃদ্ধি করেছে।