হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নিষিদ্ধ সংগঠনের ৭৭ জনকে আসামি করে সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার ১ নম্বর আসামি মৎস্যজীবিলীগ নেতা গফফার বিশ্বাস (৩৯) ও ২ নম্বর আসামী যুবলীগ নেতা রকিবুল ইসলাম রকিবকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ছাত্রলীগ ছাড়াও আওয়ামীলীগের অন্যান্য সংগঠনের নেতাদেরকেও আসামি করা হয়েছে। মামলায় একাধিক অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার দিবাগত গভীর রাতে জেলার বোয়ালমারী পৌরসদরের ওয়াবদা মোড়, ডাকবাংলোর সামনে ও মহিলা কলেজের মোড়সহ কয়েকটি স্থানে ‘হটাও ইউনুস, বাঁচাও দেশ’ শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ টিকা লিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত রঙিন ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানো হয়। ব্যানারের নিচে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকির নাম দেওয়া হয় এবং ওই ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো একটি ভিডিও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকসহ কয়েকজন ছাত্রলীগের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পরেরদিন সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্যানার ও ফেস্টুনগুলি স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের নজরে আসে। এতে এলাকায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমান সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ সংগঠনের মিছিল, মিটিং ও ব্যানার ফেস্টুন এলাকায় লাগিয়ে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অপরাধে এ ঘটনার ৪দিন পর বৃহস্পতিবার বোয়ালমারী থানা পুলিশ বাদি হয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৭৭জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন।
মামলার ১ নম্বর আসামি পৌর মৎস্যজীবি লীগের আহ্বায়ক পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমগ্রামের বাসিন্দা তেল ব্যবসায়ী গফফার বিশ্বাস ও ২ নম্বর আসামি পৌর যুবলীগের সদস্য পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কামার গ্রামের বাসিন্দা রকিবুল ইসলাম রকিব।
এ মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ তমাল আলীকে ৩ নম্বর এবং সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকীকে ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলা নম্বর-৫। মামলার ১ নম্বর ও ২ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক শামীম দেওয়ান বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, সেহেতু নিষিদ্ধ সংগঠনের মিছিল, মিটিং ও পোস্টার ব্যানার টাঙানো সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মধ্যে পড়ে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে।