শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:৪২ দুপুর
আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এলডিসি থেকে উত্তরণ: রফতানি নিরাপত্তায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য উদ্যোগ

আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বের হলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের থাকবে না অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা। তাই রফতানি আয়ের পথ সুগম রাখতে বিভিন্ন দেশ ও জোটের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ। দীর্ঘমেয়াদে বাণিজ্য সম্প্রসারণে এফটিও করে সুবিধা আদায়ের পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদে জোটটির বাজারে জিএসপি প্লাসে বাড়তি সুবিধা আদায়ে মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য। ইপিবি'র হিসাবে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রফতানির ৪৪ শতাংশই গেছে ইইউ জোটের ২৭ দেশে, যার পরিমাণ প্রায় ২১.৩৮ বিলিয়ন ডলার।

বর্তমানে বিশাল এই বাজারে এভরিথিং বাট আর্মস অর্থাৎ অস্ত্র বাদে সব পণ্য রফতানিতেই শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উত্তরণের পর আরও তিন বছর থাকবে এই বাণিজ্য সুবিধা।

তবে এরপর কী হবে? এমন প্রশ্ন তুলে উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে বের না হতে ঘোর আপত্তি ব্যবসায়ীদের। ওয়ান ফার্মা ও ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যে গ্রেস পিরিয়ড রয়েছে, এর মধ্যেই আমাদের বিভিন্ন রিজিওনাল ট্রিটি এবং দেশভিত্তিক বাণিজ্যিক চুক্তি করতে হবে। কারণ, কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি হলে শুল্ক হার কী হবে, সেটাও নির্ধারণ করতে হয়। তাই আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক-দুই ধরনের এগ্রিমেন্টই এখন অত্যন্ত জরুরি।’
  
এদিকে, উন্নয়নের পথে এই উত্তরণকে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রমাণ ধরেই এগোতে চায় সরকার। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখন এমন অবস্থানে আছি, যেখানে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উত্তরণের মানদণ্ডগুলো পূরণ করছি। নেপাল ও লাওসের তুলনায় আমাদের অবস্থান আরও ভালো। ২০২৬ সালে আমরা গ্র্যাজুয়েট করব কি না-সেই প্রশ্নই ওঠে না, কারণ এখন আর ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
 
বৈদেশিক বাণিজ্যে বাড়তি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বহুমুখী উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক জোটের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির করার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের। এরই মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইইউ প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে তা আরও স্পষ্ট হবে আগামী মাসে।
 
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে শুল্কমুক্ত সুবিধা বজায় রাখতে পারে এফটিএ। তবে স্বল্প মেয়াদে ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাসে আদায় করতে হবে বাড়তি সুবিধা। ট্রেস কনসালটিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট ইম্পোর্টের মাত্র ৬ শতাংশ হলেও, সেই দেশ বা প্রোডাক্টে শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাতে পারে। জিএসপি প্লাস ফ্যাসিলিটি তখন হারায়। বর্তমানে বাংলাদেশ যে পণ্য রফতানি করছে, বিশেষ করে রেডিমেড গার্মেন্টস, তা ইউরোপের মোট ইম্পোর্টের প্রায় ১৬.৫ শতাংশ। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধা পুরোপুরি পাবে না।’
 
এরই মধ্যে জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি-ইপিএ করার বিষয়ে অনেকটা পথ এগিয়েছে বাংলাদেশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়