মনিরুজ্জামান, ভোলা: বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের দরুন বাজারে মাথা উঁচু করে আজও দাড়িয়ে আছে ২০০ বছরের পুরনো একটি রেইনট্রি গাছ। সময়ের আবর্তনে অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও হারায়নি গাছটি। চারদিকে শাখা-প্রশাখা মেলে স্বমহিমায় ছায়া দিয়ে যাচ্ছে পুরো বাজারটিকে। শতশত পাখিদের কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দে সর্বদা মুগ্ধ থাকে সকলে। গাছটিতে এখনো দেখা মিলে শালিক, টিয়া, ময়না ও ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বাসা।
এক সময় গাছটির নিচে ছিল ফাঁকা জায়গা। সে সময়ে গ্রীষ্মের দাবদাহে গাছটির ছায়াতলে পথিক বসে স্বস্তির নিশ্বাস নিতো। শিকড়ে বসে আড্ডায় মেতে উঠতো পথচারী ও স্থানীয়রা। এখন বাজার অনেক প্রশস্ত হওয়ায় নেই সেই জায়গা। তবে দাড়িয়ে থেকে দিয়ে যাচ্ছে ছায়া।
৮২ বছরের মফিজল হক জমদ্দার জানান, আমার বাবা-দাদার কাছে এই গাছের কথা শুনেছি ৷ এটার বয়স দুইশ বছরের বেশি হবে। গাছটি আমি ছোট বেলা থেকে একই রকম দেখে আসছি। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এর আশেপাশে কোনো দোকানপাট ছিলনা। এই গাছের নিচে শিকরের উপর বসে পথিক, বাজারে আসা লোকজন ও স্থানীয়রা বিশ্রাম নিত ও আড্ডা দিত, আমরাও দিতাম।
বাজারের আ. রব ঢালী জানান, আমরা যখন দোকান করতাম তখন এখানে কিছু ছিলনা। পুরো স্থান ফাঁকা ছিল। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে গাছের আশেপাশে দোকানপাট উঠতে শুরু করে। এখন এটার চারপাশেই দোকান।
স্কুল শিক্ষক ও ওই বাজারের ব্যবসায়ী মো. রিয়াজ সিকদার জানান, গাছটি বাজারের ভিতরে থাকায় কেউ এর ক্ষতি করেনি। তাই এটি সহজেই বেড়ে ওঠেছে এবং বিশাল আকার ধারন করে ছায়া দিয়ে যাচ্ছে। গাছটি বাজারের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য বর্ধন করছে।
সাচড়া ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুল্লাহ মৃধা জানান, প্রায় দুইশ বছর ধরে এটা আমাদের বাজারের ঐতিহ্য ধারন করে আসছে। বহু বছরের এমন পুরনো গাছ বেঁচে আছে দেখে অনেকে অবাক হচ্ছে।
উপজেলা ফরেস্ট গার্ড কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, এটা একটি পুরনো গাছ। ইতিহাসের স্বাক্ষী হিসেবে বিদ্যমান। যাতে কেউ এটির কোনো ক্ষতি সাধন করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখছি।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :