শিরোনাম
◈ ভারত–বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপ: দুই দিনের বৈঠকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ ◈ পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি—আইএলওর ১০টি মৌলিক দলিল অনুমোদন করলো বাংলাদেশ ◈ প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড সাড়া—পোস্টাল ভোট অ্যাপে কোরিয়া-জাপান এগিয়ে ◈ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সম্মতি খালেদা জিয়ার ◈ আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস ◈ চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে চুক্তির সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ ◈ শ্রীলঙ্কাকে ৬৭ রা‌নে হারা‌লো  জিম্বাবুয়ে  ◈ রায়ের পর হাসিনাকে ফেরত দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে ◈ রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি, চার মাসে এলো এক লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা ◈ প্রবাসী ভোটারদের সতর্কতা: ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না দিলে পোস্টাল ভোট বাতিল

প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:০৮ দুপুর
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৩২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভুয়া অছিয়তনামা তৈরি করে ফিলিং স্টেশন দখলের অভিযোগ, ওয়ারিশদের মামলা

বগুড়া শহরের দত্তবাড়ি এলাকার একটি ফিলিং স্টেশনের ভুয়া অছিয়তনামা তৈরি করে দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওয়ারিশদের বঞ্চিত করতে মূলত প্রতারণামূলক এই অছিয়তনামা তৈরি করা হয়েছে মর্মে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ওয়ারিশরা। 

জানা গেছে, বগুড়া শহরের কানুছগাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস ১৯৯২ সালে মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন শহরের দত্তবাড়ি এলাকার শতাব্দী নামের ফিলিং স্টেশনের ব্যবসার লভ্যাংশ তাঁর দুই ছেলে আব্দুল মোমিন দুলাল ও আব্দুল মান্নানকে সমানভাবে ভাগ করে নেওয়ার জন্য দেন। আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যুর পর দুলাল ব্যবসাটি এককভাবে পরিচালনা করতেন এবং তাঁর ছোট ভাই আব্দুল মান্নানকে প্রতিমাসে লভ্যাংশ থেকে কিছু টাকা দিতেন। এক পর্যায়ে দুলাল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মারা গেলে তাঁর স্ত্রী হুসনেয়ারা বেগম শ্বশুরের একটি ভুয়া অছিয়তনামা বের করেন। অছিয়তনামায় বড় ছেলে দুলালকে পাম্পের মালিকানা ও আয় এককভাবে ভোগ করার জন্য বলা হয়। দুলালের দুই ছেলে জোবায়ের আনাম ও আশফাক আনাম কথিত অছিয়তনামা দেখিয়ে আব্দুল মান্নানকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং টাকা চাইতে গেলে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেয়।

আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যুর প্রায় ৩০ বছর পর হঠাৎ এই অছিয়তনামা দেখে তাঁর অন্য সন্তানেরাও হতভম্ব হয়ে যান। এদিকে ২০০৭ সালে এবং ২০২৩ সালে দুটি সম্পাদিত দলিলমূলে জায়গার মালিকানাও নির্ধারিত হয়। সেই দলিলে দুলালের দুই ছেলে সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও তারা দলিলের কথা অস্বীকার করে দাদার কথিত অছিয়তনামার বলে সম্পূর্ণ সম্পদ নিজেদের নামে দাবি করছেন। কিন্তু শতাব্দী ফিলিং স্টেশনের লাইসেন্স ও ডিলারশিপ লাইসেন্স এখনও মৃত আব্দুল কুদ্দুসের নামেই বহাল আছে।

আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে আনোয়ারা বেগম বলেন, বাবা বেঁচে থাকতে এবং বাবার মৃত্যুর পরেও কখনও অছিয়তনামার কথা শোনেননি তিনি। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী হঠাৎ একটি অছিয়তনামা বের করেছেন। এই অছিয়তনামার বলে তারা ফিলিং স্টেশনের ব্যবসার পুরোটা দখল করে খাচ্ছেন। তাতে করে আব্দুল মান্নানসহ সব ওয়ারিশকে ঠকানো হচ্ছে। 

দুলাল ২০১১ সালে পৌরসভার নীতিমালা বহির্ভূতভাবে ওয়ারিশদের না জানিয়ে গোপনে নিজের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স করেন। দুলালের মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তারা পৌরসভায় অভিযোগ করলে পৌরসভা যাচাই-বাছাই করে দীর্ঘ শুনানির পর দুলালের নামের ট্রেড লাইসেন্সটি স্থগিত করে দেয়। 

কিছুদিন আগে তেল চুরি ও ভেজাল মেশানো নিয়ে ওই ফিলিং স্টেশনের কর্মচারীদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে ইকবাল হোসেন নামে এক কর্মচারী খুন হন। এ ঘটনায় রতন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু এই হত্যার ঘটনার ফিলিং স্টেশনের আরও অনেকে জড়িত আছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফুলবাড়ী ফাঁড়ির এসআই জোবায়ের হোসেন বলেন, এই হত্যার সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে তা জানতে তদন্ত চলমান আছে। 

ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান বলেন, তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভাতিজারা ফিলিং স্টেশনটি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। তিনি ফিলিং স্টেশনে গেলে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে থানায় জিডি করেছেন তিনি। এছাড়া জাল অছিয়তনামায় ফিলিং স্টেশন দখল করায় আদালতে মামলা চলমান আছে। তিনি জানান, জেলা প্রশাসন গত ৬ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ফিলিং স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন। তাঁর ভাইয়ের ছেলেরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে ফিলিং স্টেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে দুলালের ছেলে জোবায়ের আনাফ দাবি করেন, দাদার অছিয়তনামা অনুযায়ী তারা ফিলিং স্টেশনের মালিক। সে অনুযায়ী তারা ফিলিং স্টেশনটি পরিচালনা করছেন।

চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মাসুদ হোসেন বলেন, ফিলিং স্টেশনের মালিকানার বিষয়ে মামলা চলমান থাকায় প্রশাসন আর এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। 

সূত্র: সমকাল 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়