হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি: আবহমান গ্রাম বাংলার সুপরিচিত একটি জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। ফসলহীন মাঠজুড়ে, রাস্তার পাশে ডোবা-নালায় জমে থাকা পানিতে এই ফুলের সমাহার দেখা যায়। সবুজের মধ্যে সাদা, হালকা গোলাপী আর বেগুনি রংয়ের অযত্নে বেড়ে ওঠা এ ফুল মুগ্ধতা ছড়ায়।
তেমনি ফরিদপুরের গ্রাম-গঞ্জের প্রায় প্রতিটি এলাকার খাল-বিল, বাড়ির পাশের ডোবায় ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন কচুরিপানা ফুল। কবি গুরুর ভাষায় ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া-ঘর হতে শুধু দু’পা ফেলিয়া’। সত্যিকার অর্থেই যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এমন এক অবহেলিত উদ্ভিদে এত নয়নাভিরাম, মনোমুগ্ধকর, চিত্তাকর্ষক ফুল, যা প্রকৃতি প্রেমীদের বিমুগ্ধ না করে পারে না। প্রতিটি এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন জাতের বিভিন্ন রঙের কচুরি ফুল ফোটে বিভিন্ন ঋতুতে।
তবে এ সময় কচুরিপানার ফুল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সৌন্দর্যের পাপড়ি মেলে ধরা কচুরিপানা ফুলের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই ছবি তুলছেন, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা।
ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা জলাশয় থেকে শিশির ভেজা কচুরিপানার ফুল তুলে খেলা করছে। গ্রামের শিশু-কিশোররাও আনন্দ করে তুলে নিয়ে খেলা করছে। কচুরিপানা আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিকর মনে হলেও কৃষিক্ষেত্রে এর যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। মাটিতে শক্তি যোগাতে ভূমিকা রাখে কচুরিপানা।
কৃষকেরা কচুরিপানা উঠিয়ে জমিতে ফলানো পেঁয়াজের ভূঁই, লালশাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ব্যবহার করছেন কচুরিপানা। সেই সঙ্গে কচুরিপানা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কচুরিপানা থেকে এখন তৈরি হচ্ছে জৈব সার।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, “কচুরিপানা গবাদিপশুর উৎকৃষ্ট খাবার, জৈবসার হিসেবে খুবই শক্তিশালী, এটা ব্যবহার করে কৃষকগণ ভাসমান শাক-সবজির চাষ করে থাকে। পুকুর ও বিলে কাপ জাতীয় মাছের বাড়তি খাবার হিসাবে কাজে লাগে, এ জলজ উদ্ভিদকে রোদে শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কচুরিপানা ফুল সব বয়সি মানুষকে আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করে।”