নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক সমাজতান্ত্রিক প্রার্থী জোহরান মামদানির প্রকাশ্য বিরোধিতা করেছিলেন অন্তত ২৬ জন বিলিয়নিয়ার। শুধু তাই নয়, মামদানিকে হারাতে তাঁরা সম্মিলিতভাবে প্রায় ২২ মিলিয়ন ডলারের তহবিল দিয়েছিলেন। তবে এত কিছু করেও আটকানো যায়নি মামদানির বিজয়। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো, নগর পরিচালিত মুদি দোকান, বিনা মূল্যে গণপরিবহন এবং সর্বজনীন শিশু যত্নের মতো প্রগতিশীল নীতি নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনে বাজিমাত করেছেন তিনি।
ধনী শ্রেণির প্রবল বিরোধিতার মুখেও মামদানির এই জয় মার্কিন রাজনীতিতে এক নতুন দৃষ্টান্ত। ফোর্বস-এর তথ্য অনুযায়ী, নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ, হেজ ফান্ড ম্যানেজার বিল অ্যাকম্যান, এয়ারবিএনবি-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা জো গেবিয়া এবং ‘ইস্টি লন্ডার’-এর উত্তরাধিকারী লডার পরিবারসহ নিউইয়র্কের অন্তত ২৬ জন ধনকুবের মিলে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোকে সমর্থন দেন এবং কুমোর নির্বাচনী প্রচারণায় ২২ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করেন।
এর মধ্যে ব্লুমবার্গ একাই দেন ৮.৩ মিলিয়ন ডলার, অ্যাকম্যান দেন ১.৭৫ মিলিয়ন, লডার পরিবার ২.৬ মিলিয়ন এবং জন হেজ ১ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেন। মোট এই তহবিলের অর্ধেকের বেশি—প্রায় ১৩.৬ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছিল মামদানির ডেমোক্রেটিক মনোনয়ন ঠেকাতেই।
মামদানি এক সমাবেশে বলেন, ‘বিল অ্যাকম্যান ও রোনাল্ড লডারের মতো বিলিয়নিয়ারেরা এই নির্বাচনে মিলিয়ন ডলার ঢেলেছেন। কারণ তাঁরা বলেন, আমরা তাদের অস্তিত্বের হুমকি। আমি স্বীকার করি—তাঁরা ঠিকই বলেছেন।’
তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, যারা আগে মামদানির বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের কয়েকজন এখন তাঁকে সমর্থনের বার্তা দিচ্ছেন। এর মধ্যে মামদানিকে উদ্দেশ্য করে সামাজিক মাধ্যমে অ্যাকম্যান লিখেছেন, ‘এখন আপনার বড় দায়িত্ব। নিউইয়র্কের কল্যাণে যদি কিছু করতে পারি, জানাবেন।’
অন্যদিকে ‘জেপি-মরগান চেস’-এর সিইও জেমি ডাইমন একসময় মামদানিকে ‘সোশ্যালিস্টের চেয়েও বেশি মার্কসবাদী’ বলেছিলেন। তবে অবস্থান পাল্টে এখন বলছেন, তিনি নতুন মেয়রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী এবং প্রয়োজনে সহায়তাও করতে প্রস্তুত।
জোহরান মামদানি ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি নিউইয়র্কের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।