সুদানের আল-ফাশারে গণহত্যা চালানোর পর শহরটি থেকে পালানোর জন্য বেসামরিক নাগরিকদের ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ বন্ধ করে দিয়েছে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। শহরটি দখলের পর থেকে সম্ভবত মৃতদেহ সরিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
ইয়েল স্কুল অফ পাবলিক হেলথের হিউম্যানিটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব (ইয়েল এইচআরএল)-এর একটি নতুন প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ল্যাবটি বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) উত্তর দারফুরের রাজধানী আল-ফাশার থেকে প্রাপ্ত স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। দুই সপ্তাহ আগে আরএসএফ সহিংসভাবে শহরটি দখল করেছিল।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শহরের চারপাশে নির্মিত একটি অস্থায়ী বাধ - চারদিকে মাটির দেয়ালের মধ্যে একটি পালানোর পথ বন্ধ করে দিয়েছে আরএসএফ।
ইয়েল এইচআরএল জানিয়েছে, আরএসএফ মাটির প্রাচীরের কাছে শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করা বেসামরিক লোকদের হত্যা করেছে।
মিডল ইস্ট আই-এর পর্যালোচনা করা ভিডিও ফুটেজে প্রাচীরের কাছে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ এবং মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ দেখানো হয়েছে।
ইয়েল এইচআরএল তাদের প্রতিবেদনে আরও বলছে, আরএসএফ দুটি স্থানে এমন জিনিসপত্র পুড়িয়েছে, যা মৃতদেহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে।
৬ নভেম্বরের ছবিতে আল-ফাশার হাসপাতালে কালো ধোঁয়ায় পুড়ে যাওয়া দৃশ্যমান কিছু দেখা গেছে। যদিও মৃতদেহ পোড়ানো ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক দাফন রীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
আরএসএফ আল-ফাশার দখলের পর শহরের প্রতিরোধ কমিটি বলেছে, সম্মিলিতভাবে ভয়াবহ উপায়ে হাসপাতালটিতে আহত ব্যক্তিদের হত্যা করা হয়েছে।
ইয়েল এইচআরএল এমন কার্যকলাপও শনাক্ত করেছে, যা মাটির দেয়ালে 'মেলিট গেটে' মৃতদেহ পোড়ানোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। আরএসএফকে 'হত্যা বন্ধ করতে হবে'
প্রতিবেদনে আরএসএফ-নিয়ন্ত্রিত শিশু হাসপাতাল থেকে মৃতদেহের মতো জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে আল-ফাশার এবং গার্নির মধ্যবর্তী একটি রাস্তায় মৃতদেহ ফেলার আশঙ্কাও উঠে এসেছে।
ইয়েল এইচআরএল জানিয়েছে, গত সপ্তাহে আরএসএফ-এর হামলার শিকার হাসপাতাল 'সম্ভাব্য গণহত্যার স্থান ছিল' এবং এই হাসপাতালের বাইরে একটি 'গণকবর' শনাক্ত করা হয়েছে।
আরএসএফ যখন আল-ফাশার দখল করে নেয়, তখন সেখানে ২ লাখ ৬০ হাজার লোক বাস করত বলে ধারণা করা হয়। ৫০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর দারফুরের বাসিন্দাদের জন্য এটিই ছিল শেষ শহর।
কিছু মানুষ নিকটবর্তী শহর তাওয়িলা এবং গার্নিতে পালিয়ে গেলেও বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিকের ভাগ্যে কী হয়েছে, তা জানা যায়নি।
ইয়েল এইচআরএল গত সপ্তাহেও বিশ্লেষণ করে দেখেছে, শহরে মানুষের বড় আকারের চলাচল হয়নি। এটি ইঙ্গিত দেয়, বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক মৃত, বন্দী কিংবা আত্মগোপনে থাকতে পারেন। সূত্র: ইত্তেফাক