মোস্তাফিজার বাবলু, রংপুর: রংপুরের পীরগাছায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে ১৫টি চুল প্রসেসিং কেন্দ্রে পানির দরে শ্রম বিক্রি করছে ১২০ জন নারী শ্রমিক।
শনিবার দুপুরে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ইউপির হরিচরণ পাড়ার একটি চুল প্রসেসিং কেন্দ্রে গিয়ে কথা হয় বানেছা বেগম (ছদ্মনাম) সহ অনেকের সাথে।
এসময় তারা জানান, প্রতি ঘন্টা প্রায় সাড়ে আট টাকায় শ্রম বিক্রি করা হয় এখানে। সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চুল প্রসেসিং করা হয়। ১০দিন পর পর প্রতি নারী শ্রমিক ৫শত টাকা করে শ্রমের মূল্য গ্রহণ করেন। হাতে গ্লোব কিংবা মুখে মাস্ক নেই কেনো জানতে চাইলে নারী শ্রমিকরা বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্লোব কিংবা মাস্ক সরবরাহ করেন না। এজন্য আমাদের রোগবালাই লেগেই আছে।
১২০জন নারী শ্রমিকের নরম হাতের ছোয়ায় প্রতিদিন প্রায় ৩ কেজি চুল প্রসেসিং করা হয়। এতে প্রতিমাসে প্রায় ৯০ কেজি চুল প্রসেসিং করেন তারা। যার বাজার মূল্য প্রায় ৯ লক্ষ টাকা। আর এ থেকে ১২০জন নারী শ্রমিক প্রতিমাসে পায় প্রায় ১লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে তদারকি কর্মকর্তা বিপ্লব আলী জানান, এ অঞ্চলে শ্রমের মূল্য কম হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা উপজেলা থেকে এসে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
তবে, সরকারি কোনোপ্রকার অনুমোদন ছাড়াই নারী শ্রমিকদের শোষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সূত্র জানায়, চুল প্রসেসিং কেন্দ্রগুলোতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া, স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ তৈরি করা, সঠিক পোশাক ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা, এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক ও যন্ত্রপাতি থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষ করে, নারী ও শিশু শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কাজের পরিবেশ ও মজুরি সংক্রান্ত অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কিন্তু এখানে এসবের কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়দের দাবি, সিভিল সার্জন, পরিবেশ অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তর সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তা না হলে এ এলাকার নিম্ন আয়ের নারী শ্রমিকদের ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরতে হবে।