জুলাই অভ্যুত্থান উপলক্ষে মাদারীপুর জেলা বিএনপির বিজয় মিছিল নিয়ে অংশ নেওয়া পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও তার দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মাদারীপুর পৌর শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- মাদারীপুর পৌরসভার নতুন মাদারীপুর গ্রামের আজিজ মুন্সির তিন ছেলে লিখন মুন্সি, মিলন মুন্সি ও সোহাগ মুন্সি। গুরুতর আহত লিখন ও সোহাগকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার। আহতদের মধ্যে লিখন মুন্সি মাদারীপুর পৌর ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তিনি শ্রমিক দল নেতা শাকিল মুন্সি হত্যা মামলার আসামি।
আহত পরিবার ও পুলিশ জানায়, আজ দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় মিছিল শকুনী লেকপাড় থেকে ইটেরপুলের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে লিখন মুন্সিকে কুপিয়ে জখম করে কয়েকজন। তাকে রক্ষা করতে গেলে লিখনের দুই ভাই মিলন মুন্সি ও সোহাগকেও কুপিয়ে জখম করে চলে যায় হামলাকারীরা। পরে তাদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। লিখন ও সোহাগ মুন্সির অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, চলতি বছরের ২৩ মার্চ রাত ১০টার দিকে মাদারীপুর শহরের বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি শাকিল মুন্সি নিহত হন। সেই মামলার আসামি ছিলেন শহিদুল ইসলাম লিখন মুন্সি ও সেলিম মুন্সি।
এ বিষয়ে আহত সোহাগ মুন্সি বলেন, ‘হত্যা মামলায় আমার দুই ভাই জামিনে আছেন। তারা বিএনপির সক্রিয় কর্মী। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ডিসি ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব শত্রুতার জেরে হান্নান ঢালী, বাচ্চু হাওলাদার, যাচ্চু হাওলাদার, মামুন ঢালী ও রনি মুন্সিসহ কয়েকজন মিলে লিখনের ওপর হামলা চালায়। তাকে কুপিয়ে জখম করে। লিখনকে রক্ষা করতে গেলে আমাকে ও ভাই সেলিম মুন্সিকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।’
ঘটনার পরে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত হান্নান ঢালী, বাচ্চু হাওলাদারসহ হামলায় জড়িতরা। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে তাদের ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মিছিলের পেছনের দিকে থাকা লিখন মুন্সিকে দেশীয় অস্ত্রী দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এছাড়া তার দুই ভাইকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
বিএনপির বিজয় মিছিলে ছাত্রলীগ নেতার অংশগ্রহণ ও হামলা প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের শোভাযাত্রায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কেউ জড়িত না। হামলাকারী ও হামলার শিকার উভয়ই বহিরাগত। এখানে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জের ধরে বহিরাগত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতাসহ তিনজনকে কুপিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানকে বিব্রত করতে ও বিএনপির সুনাম নষ্ট করতে বহিরাগতরা এই হামলা করেছে। এখানে বিএনপির কেউ কোনোভাবে জড়িত নয়।’ উৎস: সমকাল।