শিরোনাম
◈ শিক্ষক-কর্মচারীদের মাধ্যমিক স্তরে বদলি ও পদায়নের নতুন নির্দেশনা ◈ হাজিদের সোয়া ৮ কোটি টাকা ফেরত দেবে সরকার ◈ জরুরি অবস্থা ঘোষণায় বিরোধীদলের অংশগ্রহণ ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষার সুপারিশ ◈ গভীর রা‌তে ক্লাব বিশ্বকা‌পের ফাইনাল, এই আ‌য়োজ‌নে ফিফার আয় ২৪ হাজার কোটি টাকা ◈ সিরিজ বাঁচা‌তে রা‌তে শ্রীলঙ্কার মোকা‌বিলা কর‌বে বাংলা‌দেশ ◈ চীনের সুপার ড্যাম,: ভারত ও বাংলাদেশের উদ্বেগ ও বাস্তবতা ◈ ভেরিফিকেশন ছাড়া আর নয় শিক্ষক নিয়োগ: কার্যকর হলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন পরিপত্র ◈ সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন ◈ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং হলেও জাতীয় নির্বাচন সম্ভব: বিবিসি বাংলাকে সিইসি ◈ সন্ত্রাসীদের ধরতে যে কোন সময় সারাদেশে চিরুনি অভিযান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৩ জুলাই, ২০২৫, ০২:১৭ দুপুর
আপডেট : ১৩ জুলাই, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপির মঞ্চে শ্রমিক লীগ নেতা! রাজশাহীতে তৃণমূলে ক্ষোভের বিস্ফোরণ:

ইফতেখার আলম বিশাল, রাজশাহী : রাজশাহীতে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে নেসকো বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামের উপস্থিতি ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। এক সময়ের আওয়ামী ঘরানার এ নেতার বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার পেছনে দাঁড়িয়ে ছবিতোলা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে সংগঠনের আদর্শ ও নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী বিভাগের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সৈয়দ শাহীন শওকত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা ও সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন।

বিতর্কটি চরমে ওঠে যখন নেসকো বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ-যা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সংগঠন হিসেবে পরিচিত-এর রাজশাহী কমিটির সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছবি ছড়িয়ে পড়তেই ফেসবুকসহ নানা প্ল্যাটফর্মে নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

এক ত্যাগী বিএনপি কর্মী ফেসবুকে লিখেছেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্টের পেতাত্মারা নাকি কনভেন্স করে চলছে হেরে যাবে ত্যাগিরা। জুলাই ৩৬-এর শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে গড়ে ওঠা বিএনপি কি আজ সুবিধাবাদীদের পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হচ্ছে?

আরেকজন লিখেছেন, যিনি লাঠি হাতে বিএনপির মিছিল প্রতিহত করেছেন, তিনিই এখন আমাদের নেতার পেছনে ছবি তোলেন—এটা কি মেনে নেওয়া যায়?

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, সিরাজুল ইসলাম ছিলেন ২০২৩ সালের নেসকো বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদিত রাজশাহী কমিটির সহ-সভাপতি। ওই কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মোমিন আলী, সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক হারেজ উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক আজমল হোসেন এবং উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন হুমায়ুন কবির, রেজাউল হাসান, মাসুম খাঁন ও মো. জাহাঙ্গীর রহমান। এদের অনেকেই এখন বিএনপির শ্রমিক সংগঠনে সক্রিয়।

তাদের অভিযোগ, জুলাই বিপ্লব’ পরবর্তী রাজনৈতিক মোড় পরিবর্তনের সুযোগে তারা বিএনপি শ্রমিক সংগঠনে স্থান করে নেন। এ নেতারা কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের-ঘনিষ্ঠ নেতাদের ‘ম্যানেজ’ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্ত নেসকো জাতীয়তাবাদী বিদ্যুৎ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কমিটি অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। আর এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছেন মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি, সহ-সভাপতি আব্দুল বারেক শেখসহ কয়েকজন সুবিধাভোগী নেতা, যারা অতীতে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।

তারা দাবি করেন, এসব ব্যক্তিরা আজ আদর্শ বিসর্জন দিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন এবং নেসকোর অভ্যন্তরে পুনরায় দুর্নীতির চক্র গড়ে তুলছেন।

নেসকো জাতীয়তাবাদী বিদ্যুৎ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামীপন্থী বিতর্কিত নেতাদের বিএনপির ব্যানারে পুনর্বাসন করা হচ্ছে—এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। এতে রাজনীতির আদর্শিক ভিত্তি দুর্বল হচ্ছে।

রাজশাহী মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, বিষয়টি আমাদের দেখার নয়। কেন্দ্রীয় কমিটি যাদের দায়িত্ব দিয়েছে, তারাই দেখবে। আমরা কমিটি দিই না, শুধু বিষয়টি কেন্দ্রকে জানিয়েছি।

বিষয়টি নিয়ে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও শুরুতে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে সংক্ষেপে জানান, তিনি মিটিংয়ে আছেন। এরপর আর তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী বিভাগের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, আমি বিষয়টি খেয়াল করিনি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিনি না। বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এত বড় সমাবেশে কে কোথা থেকে এসেছে এবং কার মাধ্যমে এসছে তা সবসময় পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়না।

তিনি আরও বলেন, আমরা পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছি—যারা পূর্বে সরকারি দলে থেকে অন্যায়-অবিচার করেছেন, হয়রানি চালিয়েছেন, তারা আমাদের কর্মসূচিতে জায়গা পাবে না। যদি কেউ এমন ব্যক্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়