নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ী গ্রামের ছেলে জামিল হোসেন। মালয়েশিয়ায় প্রবাসজীবনের সময় তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় নাজিয়ার। সেই পরিচয় ধীরে ধীরে রূপ নেয় বন্ধুত্বে, এরপর প্রেমে। একসময় দুই পরিবারের সম্মতিতে মালয়েশিয়াতেই তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
তবে প্রেমের এই জয়গাথার আরেকটি নতুন অধ্যায় যোগ হলো আজ শুক্রবার। জামিলের নিজের গ্রামে পারিবারিক আয়োজনে সম্পন্ন হয় তাঁদের বিবাহের অনুষ্ঠান। আগের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত হয় গায়েহলুদের আয়োজন।
জানতে চাইলে জামিল হোসেন জানান, ২০১৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে জহুরবারুর মোয়ার থানার এক ফার্নিচারের দোকানে চাকরি করতেন। পাশে একটি শপিং মলে নিয়মিত যাতায়াতের সময় নাজিয়ার সঙ্গে পরিচয়। সেই সম্পর্ক রূপ নেয় প্রেমে। পরে নাজিয়া তাঁর পরিবারকে বিষয়টি জানালে শুরুতে আপত্তি থাকলেও শেষমেশ দুই পরিবার সম্মত হয়। মালয়েশিয়াতেই তাঁরা বিয়ে করেন। এরপর ৩০ জুন বাংলাদেশে আসেন এবং এখানেও ইসলামি রীতিতে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
নাজিয়া বিনতে শাহরুল হিজাম বলেন, ‘জামিলকে আমি মন থেকে ভালোবাসি। বাংলাদেশে এসে খুবই ভালো লাগছে। জামিলের পরিবার আমাকে মেয়ের মতো আপন করে নিয়েছে। গ্রামের মানুষজন এত আন্তরিক—ভাবতেই পারিনি এত ভালোবাসা পাব।’ তিনি জানান, এখানকার খাবারও তাঁর ভীষণ পছন্দ হয়েছে।
জামিলের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘বউমার ব্যবহার ভালো। সে খুব সহজেই পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। নানা কাজে সবার পাশে দাঁড়ায়। মানুষ তাকে দেখতে আসছে, প্রশংসাও করছে।’
এদিকে নাজিয়াকে একনজর দেখতে শুধু পাশের গ্রাম নয়, আশপাশের উপজেলা এমনকি দূরদূরান্ত থেকেও ছুটে আসছেন মানুষ। কৌতূহলী লোকজন বলছেন, টিভি বা ফেসবুকে বিদেশি বউয়ের খবর দেখেছেন, কিন্তু এবার তা বাস্তবে দেখার সুযোগ হলো। নববধূকে দেখতে বাড়ির আঙিনা এখন যেন এক উৎসবমুখর মেলায় পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। অনেকেই এখন শুধু দেখতে না, ছবি তুলতেও আসছে। মনে হচ্ছে, সিনেমার গল্প বাস্তব হয়ে গেছে।’