শিরোনাম
◈ বাংলা‌দে‌শের বিরু‌দ্ধে সিরিজ জিতলো নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দল ◈ ভারত পা‌শে না থাকলে পিএস এ‌লে পা‌কিস্তা‌ন ক্রিকেট বো‌র্ডের  হাজার কোটি টাকার ক্ষতি ◈ গাজার একদিনে ১০০ লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলের বিমান হামলা ◈ তিন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন : প্রেস সচিব ◈ প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুই বিষয়ে রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত (ভিডিও) ◈ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ও তিন উপদেষ্টার অপসারণ দাবি বিএনপির ◈ প্রধান উপদেষ্টার কাছে এনসিপির ৫ দাবি (ভিডিও) ◈ যুক্তরাজ্যে সম্পদ জব্দের ঘটনা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি: গভর্নর ◈ অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা: জাতিসংঘ ◈ এলডিসি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমদানি-রপ্তানি নীতির পুন:মূল্যায়ন জরুরি: ঢাকা চেম্বার

প্রকাশিত : ২৪ মে, ২০২৫, ০৭:২০ বিকাল
আপডেট : ২৫ মে, ২০২৫, ১২:১২ রাত

প্রতিবেদক : মাসুদ আলম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গাছে গাছে ঝুলছে রসালো লিচু

তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বাগানের প্রতিটি গাছে ঝুলছে টসটসে লাল রসালো লিচু, যা খেতে বেশ সুস্বাদু। ফলের রাজ্য হিসেবে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার লিচু সুনাম নাম এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে বিদেশে। প্রায় বাড়ির আঙিনা ছড়িয়ে রয়েছে লিচু গাছ। গ্রামটিতে ছোট-বড় মিলিয়ে রয়েছে অর্ধ শতাধিক বাগান। 

লিচুর মৌসুম এলেই এ গ্রামে বইতে থাকে উৎসবের হাওয়া। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাইকার ও ক্রেতারা। প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায় দরে। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পাহাড়পুর, সিঙ্গারবিল,  হরষপুর, পত্তন, চম্পকনগর ইউনিয়নে লিচুর আবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর ও সিঙ্গারবিল  ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে লিচুগাছ ও বাগান। 

স্হানীয় লিচু চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান, বিজয়নগরে সাধারণত তিন জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়। এগুলো হলো পাটনায় বা দেশি লিচু, বোম্বাই ও চায়না-৩। এ ছাড়াও বেদেনা, চায়না-১ ও চায়না-২ জাতের লিচু চাষ হয় এখানে। সবার আগে বাজারে আসে পাটনায় বা দেশি লিচু। বোম্বাই ও চায়না-৩ লিচু কিছুদিন পরে পাকলেও বাজারে এর কদর বেশি। বিক্রিও হয় বেশি দামে। চায়না লিচু দেশি লিচুর মতো দেখতে হলেও আকারে ছোট হয়। খেতে সুস্বাদু।

বাগানের মালিক মাসুদ মিয়া বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০১০ সালে দেশে ফিরে দুই বিঘা জমিতে শুরু করেন পাটনায় লিচু চাষ। প্রবাস জীবন বাদ দিয়ে দেশের মাটিতে কিছু করার ইচ্ছে থেকেই সাফল্যের শুরু। মাসুদ মিয়ার এই বাগানটিতে ৫৫ টি গাছ রয়েছে। এই গাছগুলো পরিচর্যার জন্য একাধিক শ্রমিক রাখা হয়েছে। সে সাথে আমার পরিবারের লোকজনও এই লিচু গাছগুলোর পরিচর্যায় কাজ করেন।আমি প্রতিবছর গড়ে ৭/৮ লক্ষ টাকার লিচু বিক্রি করার টার্গেট থাকে। এবার বর্তমান মৌসুমে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

পাহাড়পুর ইউনিয়নের লিচু চাষি মো. দুলাল মিয়া জানান, তার ৬ টি লিচু বাগান রয়েছে। এরমধ্যে ৬টি বাগানে ১৮৫টি গাছ রয়েছো। এবছর ৮৫টি গাছে লিচু এসেছে।  তবে প্রথম দিকে  আবহাওয়া যদি ভালো থাকতো তাহলে ফলন আরো ভালো হতো।  

এদিকে লিচুর মৌসুমকে উপলক্ষ করে  বিজয়নগর উপজেলা যেন এক দর্শনার্থী কাছে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে এখানকার লিচুর বাগান গুলোতে দর্শনার্থীরা উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে । এতে উপজেলার চাষীদের বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষে সুফল বয়ে আনে।  

জেলা শহর থেকে ঘুরতে যাওয়া শরীফ উদ্দিন বলেন, বিজয়নগরের লিচুর বেশ খ্যাতি রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বিজয়নগরের লিচু বাগানের ছবি পোস্ট করে। সেজন্য পরিবার উৎসাহ হয় লিচু বাগানে ঘুরতে আসছি। বাগানে প্রতিটি গাছের ডালে ডালে লিচু ঝুলার দৃশ্য দেখে পরিবারের সকলেই বেশ আনন্দ উপভোগ করছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জিয়াউল ইসলাম জানান, বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৪০ হেক্টর জমিতে গাছ ইতোমধ্যেই ফল দিচ্ছে। তিনি আশা করছেন, এবার প্রায় ১৭০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদিত হতে পারে। শুধু লিচুই নয়, বিজয়নগরের জমিতে এখন সবধরনের ফল ও সবজি আবাদ হচ্ছে। প্রতিটি মৌসুমেই নতুন নতুন ফসল আসছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়