বেনাপোল প্রতিনিধি (যশোর): বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে চৌধুরী সুপার মার্কেট নামক তিনতলা একটি বাণিজ্যিক ভবনের প্রবেশমুখে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করার প্রতিবাদ জানিয়ে পরিত্রাণ চেয়েছেন মার্কেট মালিকসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, এতে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে এবং মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
চৌধুরী সুপার মার্কেটের মালিক দোলাল হোসেন চৌধুরী জানান, মার্কেটটিতে সিঅ্যান্ডএফ, ট্রান্সপোর্ট, মানি চেঞ্জার, পরিবহন কাউন্টার ও ট্রাভেল এজেন্সির শতাধিক ব্যবসায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু ছয় মাস আগে ৪৯ ব্যাটালিয়নের বিজিবির উপ-অধিনায়ক ফারজিন ফাহিম ভারত থেকে আসা পাসপোর্টধারী ল্যাগেজ ব্যবসায়ীদের গতিরোধের কথা বলে মার্কেটের সামনে বাঁশের বেড়া দেন। তিনি ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছিলেন, দুই দিনের মধ্যে বেড়া সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু এখনো তা তোলা হয়নি।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী তৌহিদুর রহমান বলেন, "বাঁশের বেড়া দিয়ে আমাদের বৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরকারকে কোটি টাকা রাজস্ব দেই, অথচ বিজিবি আমাদের আবেদনেও সাড়া দিচ্ছে না।"
বেনাপোল বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা আব্দুল মালেক বলেন, “বিজিবি কোনো আলোচনা ছাড়াই বাণিজ্যিক স্থাপনার সামনে এমন বেড়া দিয়ে রেখেছে যা আন্তর্জাতিক মান ও সৌন্দর্যের পরিপন্থী। এটি গরুর খাটালের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।”
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী মোস্তাফিজ্জেহা সেলিম বলেন, “মহাসড়কে বাঁশের বেড়া দিয়ে আমাদের যাতায়াত ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়।”
আশিক সাগর পরিবহনের ম্যানেজার এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি আলী আশরাফ জানান, "আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের পাশে এমন অবরোধ পর্যটকদের মধ্যেও বিরূপ প্রভাব ফেলে। আমরা বিজিবির কাছে বারবার অনুরোধ জানিয়েছি বাঁশের বেড়া কিছুটা পেছানো হোক। তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা বাস্তবায়ন করেনি।"
সচেতন গণমাধ্যমকর্মী আনিসুর রহমান বলেন, "বিশ্বের কোথাও পাসপোর্টধারী যাত্রী বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অবরুদ্ধ করে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বাঁশের বেড়ার নজির নেই। অস্ত্রধারী বিজিবির দায়িত্ব পালনে ঘাটতি থাকলে তা অন্যভাবে সমাধান হওয়া উচিত।"
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাসপোর্টধারী ল্যাগেজ ব্যবসায়ীদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে তারা বাঁশের বেড়া স্থাপন করেছেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, এই পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হোক।