রিয়াদ ইসলাম, ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এরই মধ্যে কোরবানির পশু বেচাকেনা জমে উঠেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঈশ্বরদীতেচাহিদার চেয়ে প্রায় ৩১ হাজার বেশি পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
খামারিরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে কোরবানির পশুর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও গোখাদ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের খরচ অনেকটাই বেড়েছে। ফলে তাঁরা যে পশুগুলো কোরবানির জন্য যত্ন করে লালনপালন করেছেন, সেগুলোর ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৪২ হাজার ৫১০। তবে বিক্রির জন্য উপজেলার প্রায় ৩ হাজারের বেশি খামারসহ গৃহস্থের বাড়িতে প্রস্তুত রয়েছে ৭৩ হাজার ৫১৬ পশু। সেই হিসাবে স্থানীয়ভাবে লালনপালন করা পশু দিয়েই চাহিদা মেটানো সম্ভব। উপজেলার অরনখোলা এলাকার জোয়াদ্দার ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী আবু তালেব জোয়ারদার বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ছোট-বড় প্রায় সব খামারিই তাদের গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অনেকেই ইতিমধ্যে বিক্রি শুরু করেছেন।’
তিনি আরও জানান, ‘ঈশ্বরদী থেকে প্রতিবছরই অনেক গরু ঢাকার গাবতলী হাটে বিক্রির জন্য নেওয়া হয়। এবারও সে লক্ষ্যে ব্যাপারীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। অনেকেই গরু দেখে দেখে অগ্রিম চুক্তিও করছেন।’ পাকুরিয়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় পদকপ্রাপ্ত খামারি আমিরুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার গো খাদ্যের দাম ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বেড়েছে খামারে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরিও। এ অবস্থায় খামারিদের আশা, কোরবানির পশু বিক্রিতে বাড়তি কিছু দাম পাবেন। মিয়ানমার ও ভারত থেকে নিয়ে আসা গরু বাজারে উঠলে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া সম্ভব না।
উপজেলার দুইটি হাটে কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ ঈশ্বরদীর অরনকোলা পশু হাটে স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও দূর-দূরান্তর ক্রেতারা আসছেন। গত মঙ্গলবার এই হাঁটে গরু ও মহিষসহ কোরবানির পশু বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘উপজেলার হাটগুলোতে যাতে কেউ অসুস্থ গরু বিক্রি করতে না পারে তা তদারকির জন্য দুজন উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে
ভ্রাম্যমাণ দল বাজার তদারকি করছে।’ ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাট অথবা পশু পরিবহনের গাড়ি থেকে কেউ চাঁদা দাবি করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ হাটে
পুলিশের বিশেষ টিম নিয়োজিত রয়েছে।’