জিয়াবুল হক, টেকনাফ : কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতাকে না পেয়ে রাফি নামে তার ১৪ বছরের ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে আটক করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও পুলিশ বলছে, ওই কিশোরকে তারা অভিযান চালিয়ে আটক করেছে।
আটককৃত স্কুলছাত্র টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা দরগাহপাড়া এলাকার রেজাউল করিমের ছেলে। সে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র। এদিকে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্কুলছাত্র রাফির আটক নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ৪ দিন পর পুলিশ ২৯ নভেম্বর রাতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ বলেছে, গত ২৬ নভেম্বর ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা দরগাহপাড়া সাকিনের নুরুল আমিনের বাড়ির সামনে টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে এসআই (নিরস্ত্র) বদিউল আলম, এএসআই (নিঃ) মো. আদম আলী, এএসআই (নিঃ) তুষার দাশ সঙ্গীয় ফোর্সসহ সড়কের ওপর অভিযান পরিচলনা করে। অভিযান পরিচালনাকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাফিকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছে থাকা নীল রংয়ের শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে বিদেশি অস্ত্র পাওয়া যায়।
তবে স্কুলছাত্র রাফির পরিবার দাবি করছে, সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। রাফির বাবা রেজাউল করিম বলেন, আমি হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য। আমি প্যানেল চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে একটি চক্র। একটি পক্ষের ইন্ধনে ওসি সাহেব আমাকে আটক করতে আসেন। তবে আমাকে না পেয়ে আমার ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। এটি যে ষড়যন্ত্র সেটি স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। গভীর রাতে সপ্তম শ্রেণীর একজন স্কুলপড়ুয়া ছাত্র কেন সড়কে থাকবে? এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওসি সাহেব নিজেই কেন আসবেন। এই থেকে বোঝা যায় এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
এদিকে নুরুল আমিনের স্ত্রী সাফিদা অভিযোগ করেছেন, মধ্যরাতে পুলিশ তার ঘরে ঢুকে। তারপর সরাসরি ঘরের আলমারি খুলে তাকে অস্ত্র দেখায়। সফিদার দাবি, তিনি নিজেও জানেন না আলমারিতে অস্ত্র আছে। এটি ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন এই গৃহবধূ।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গিয়াস উদ্দিন জানান, ২৭ নভেম্বর বুধবার রাতে তারা দরগায় অভিযান চালাচ্ছিল। এমন সময় পুলিশ দেখে ২ জন পালিয়ে যেতে চাইলে রাফিকে ধরে ফেলে তারা। তারপর তার ডান হাতে থাকা নীল রঙের শপিং ব্যাগ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি এবং ৪০ রাউন্ড শটগানের গুলি উদ্ধার করা হয়। শিশু রাফি বাবার নির্দেশে নুরুল আমিনের বাড়ির পেছনে অস্ত্র মজুদ করতে যাচ্ছিল। মূলত শিশুর রাফির বাবা রেজাউল করিম চিহ্নিত সন্ত্রসী ও ইয়াবা কারবারের সাথে জড়িত। সন্ত্রাসী কাজের জন্য লাইসেন্সবিহীন এই অস্ত্র মজুদ করেছিল।
তিনি আরও বলেন, শিশু রাফিকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আপনার মতামত লিখুন :