শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারী, ২০২২, ০৩:৪৮ রাত
আপডেট : ২৩ জানুয়ারী, ২০২২, ০৩:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শামীম আহমেদ: আমার দেখা ফরিদ স্যার

শামীম আহমেদ: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ফরিদ উদ্দিন স্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। আমার যতোদূর মনে পড়ে তিনি দ্বিতীয় বর্ষে আমাদের স্ট্যাটিসটিকস পড়াইতেন। সাধারণত সপ্তাহের ৩ দিন এক বিষয়ে ১ ঘণ্টা করে ৩টা ক্লাস থাকতো। তবে ফরিদ স্যার একদিন সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে টানা পড়াইতেন, বাকি দিন আর আসতেন না। পৃথিবীর শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সপ্তাহে ১টা ৩ ঘণ্টার ক্লাস থাকে, কিন্তু সেটা তো সেসব জায়গার নিয়ম। ছাত্ররা বলতো ফরিদ স্যার এই কাজ করতেন কারণ তিনি কোনোমতে একটা ক্লাস নিয়েই তার গার্মেন্টসে দৌড় দিতেন।

সকাল ৮টায় ক্লাস শুরু হতো বলে তার ক্লাস আমার বেশি একটা করা হয়নি। ১৯-২০ বছর বয়সে কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ সকাল ৮টায় ইউনিভার্সিটির ক্লাস করতে ঘুম থেকে উঠে না। যাই হোক যে দুয়েকটা ক্লাসে যেতাম, ফরিদ স্যার খুবই খারাপ পড়াতেন। বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থাকতেন পুরো সময় শিক্ষার্থীদের দিকে পশ্চাৎদেশ দেখিয়ে। হাতের চোথা থেকে গড় গড় করে বোর্ডে লিখতেন আর ভালো ছাত্ররা পাগলের মতো সেগুলো কপি করতো। লিখতেন আর মুছতেন, পোলাপাইন কপি করে কুলাইতে পারতো না। লিখতে লিখতে আবার বিড় বিড় করে পড়তেন কী লিখছেন। মাঝে মাঝে পেছনে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করতেন সবাই বুঝছে কিনা সেটা।

তো যেহেতু স্যার অসম্ভব বাজে পড়াইতেন আমার আর জীবনে স্ট্যাটিসটিকস শেখা হয়নি। তবে তিনি ভদ্রলোক ছিলেন। সালামের জবাব দিতেন। সামনাসামনি পড়লে হাসতেন। ভালো আছি কিনা জিজ্ঞেস করতেন। এমন অনেক স্যার ছিলেন পুারা জামায়াত-বিএনপি, শেয়ার মার্কেট লুটপাটে ব্যস্ত থাকতেন, বিরাট ইসলামের রক্ষক দাবি করলেও কখনো সালামেরও উত্তর দিতেন না। ঘোঁত ঘোঁত করে শব্দ করতেন ভ্রু কুচকিয়ে বিরাট বিরক্তির সঙ্গে। সেই হিসেবে ফরিদ স্যারকে অত খারাপ লাগতো না। এই লেখার সঙ্গে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সিরিয়াস লেখা পত্রিকায় আসবে। এটা জাস্ট স্মৃতিচারণ করলাম আর কি।

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়