শামসুদ্দিন আহমেদ: দেশের অবস্থা ভালো না। ছাত্ররা এখন আর পড়ে না। আকাট মুর্খগুলোকে দলীয় বিবেচনা এবং ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এরা নিজেরা পাশ করেছে নকল করে, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অথবা পরীক্ষার হলে বসে বই দেখে দেখে। তাই আজ শিক্ষার মান ভূতল স্পর্শ করেছে। শিক্ষাব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
রাজনীতি এক গণধিকৃত ঘৃণ্য পেশায় পরিনত হয়েছে। রাজনীতিবিদরা চোর। আমলারা দুর্নীতিবাজ। মন্ত্রীরা পা-চাটা। এমপিরা সব লাঠিয়াল। কর্মীরা চাঁদাবাজ। পুলিশ ঘুষখোর। আলেমরা ভণ্ড ও মিথ্যাচারী।
শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত, ললিতকলা, ক্রীড়াঙ্গন - সবখানে সবকিছু হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছে।
লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুট করে আমলা ও দলীয় ক্যাডাররা কানাডা আমেরিকায় রাজপ্রাসাদ কিনে রাজরাজড়ার জীবন যাপন করছে।
ইতিহাস বিকৃতি গোয়েবলসিয় নগ্ন মিথ্যাচারকেও হার মানিয়েছে। সরকার বদলের সাথে সাথে দেশের ইতিহাস বদল হচ্ছে। যখন যে দল ক্ষমতায় আসছে তখন সে দল তার সুবিধামতো আজগুবি সব গল্প ফেঁদে তাকে 'ইতিহাস' নাম দিয়ে পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভূক্ত করছে। ফলে আগামি প্রজন্মের পক্ষে বাঙলাদেশের সঠিক ইতিহাস নির্ণয় করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যে শিশুর বয়স ছিল মাত্র তিন মাস তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকার অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে।
রাষ্ট্রক্ষমতার উপরতলায় অবস্থানকারি প্রত্যেকটা লোক মিথ্যাবাদী। জনগণও সত্যের চাইতে মিথ্যাকেই অধিক গুরুত্ব দেয়। তারা মিথ্যা বলতে, শুনতে ও তাকে সত্য বলে বিশ্বাস করতে খুব আনন্দ পায়।
প্রতারককে সাধুর আসনে বসিয়ে তার গুণকীর্তন করে। প্রকৃত সাধুকে ভ্রষ্টাচারী অপবাদ দিয়ে উপাসনালয়ের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে।
চারদিকে কেবল মিথ্যার জয় জয়কার। ভোট জালিয়াতি বাঙলাদেশের নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও গণতন্ত্রকে বিশ্বের কাছে হাসির খোরাকে পরিনত করেছে। আগে রেজাল্ট, পরে ভোট। এই হলো নির্বাচনের নমুনা।
গত পঞ্চাশ বছরে মিথ্যা সত্যের আপাদমস্তক গ্রাস করে ফেলেছে। বাঙলাদেশ আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে সেখানে তার পায়ের তলায় কোন মাটি নাই।
আমরা এখন কি করবো? চিৎকার করে বলছি, আমরা এখন কি করবো? কি করবো?