আজফার হোসেন : দেশে ও বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ও শিক্ষক থাকার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে বারবারই টের পেয়েছি, সনাতন ইংরেজি শিক্ষা এবং ইংরেজি সাহিত্যের চর্চা মোটেই কোনো নিরীহ বিষয় নয়, বরং সেই শিক্ষা ও চর্চা সাম্রাজ্যবাদের সাংস্কৃতিক লজিকের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত। তবে বিষয়টাকে আমি অদ্বান্দ্বিকভাবে হাজির করতে চাচ্ছি না মোটেই। সত্য, ওই ইংরেজি বিভাগগুলোতেও কিছু প্রতিরোধী বুদ্ধিজীবীরাও কাজ করেন। কিন্তু আফ্রিকার লেখক-অ্যাক্টিভিস্ট নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গোর বরাতে না বলে উপায় নেই যে, তৃতীয় বিশ্বের ইংরেজি বিভাগগুলো এখনো অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষুদে উপনিবেশের কাজ করে চলেছে। ব্যতিক্রম আছে অবশ্যই। তবে বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগগুলোর ক্ষেত্রেও ক্ষুদে উপনিবেশের কথাটা প্রযোজ্য।
কোনো কোনো ইংরেজি বিভাগে তথাকথিত ‘উত্তর-ঔপনিবেশিক’ তত্ত্ব পড়ানো হলেও সেখানে এখনো রয়ে গেছে ওইসব দেশি সাহেব ও মেমসাহেব, ওইসব ছাত্র ও শিক্ষক, যারা এখনো ইংরেজি নিয়ে দারুণ আত্মম্ভরিতা প্রকাশ করে। এছাড়া তো রয়েছে সাহিত্য পড়ার ও আলোচনার বুর্জোয়া নন্দনতাত্ত্বিক ও ঔপনিবেশিক কায়দা। তাদের নাক উঁচু স্বভাব এবং অহমিকা নিঃসন্দেহে হাস্যকর। আর ওই অহমিকার পর্দা ভেদ করে তারা কখনোই দেখতে পায় না যে, তারা কতোটা সাংস্কৃতিক ও মানসিক ক্রীতদাসত্বকে বরণ করেছে। ঔপনিবেশিক মতাদর্শগত আধিপত্য কীভাবে এমনকি অচেতনেও কাজ করে চলেছে, তার একটি যুৎসই ‘সিম্পটোম্যাটিক’ ক্ষেত্র হচ্ছে ওইসব ইংরেজি- ফোটানো ফুটানিমারা ইংরেজি বিভাগ। তবে অবশ্যই আলাদা করে ইংরেজি বিভাগ নিয়ে কথা বলাটা মোটেই যথেষ্ট নয়। বলা দরকার যে, আমাদের পুরো শিক্ষাব্যবস্থাটাই তো অনেক ক্ষেত্রে দারুণভাবে উপনিবেশবাদী। ফেসবুক থেকে