কল্লোল মোস্তফা: তারকারা অর্থের বিনিময়ে পণ্যের বিজ্ঞাপন করে থাকেন। কোনো পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়ার আগে তারকাদের দ্বায়িত্ব হলো নিশ্চিত হয়ে নেওয়া যে সেই পণ্য বা সেবাটির জন্য উৎপাদন/বাজারজাতকারী কোম্পানিটি সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বৈধ অনুমোদন নিয়েছে কিনা। প্রয়োজনীয় সব ধরনের আইনি অনুমোদন না থাকার পরেও বা এ বিষয়ে কোনো অস্পষ্টতা থাকার পরেও যদি তিনি তার তারকাখ্যাতি ব্যবহার করে সেই পণ্য মানুষের কাছে প্রচার করেন, তাহলে উৎপাদন বা বাজারজাতকারী কোম্পানির পাশাপাশি তিনিও সেই পণ্য বা সেবার নিম্নমানের জন্য আইনগতভাবে ও নৈতিকভাবে দায়ী থাকবেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও দায় থাকবে। কারণ অনুমোদন না নিয়ে কোনো পণ্য বা সেবার ব্যবসা বা প্রচারণা যেন কেউ করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারি প্রতিষ্ঠান বা দপ্তরগুলোরই।
অন্যদিকে কোনো পণ্য বা সেবার সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বৈধ অনুমোদন থাকার পরেও যদি তার গুণগত মান খারাপ হয় এবং মানুষ তা কিনে প্রতারিত হন, তাহলে তার মূল দায় কোম্পানির পাশাপাশি সরকারের সেই প্রতিষ্ঠানের, যেই প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্ব হলো এই পণ্য বা সেবার অনুমোদন দেওয়া এবং নিয়মিত তদারকি করা। পণ্য বা সেবার প্রকৃত মান যাচাই করার জন্য যে ধরনের কারিগরি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনের প্রয়োজন তা সাধারণত একজন ব্যক্তি বিজ্ঞাপন তারকার কাছে থাকে না। এ কারণেই কোনো পণ্য ও সেবা জনগণের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা নিশ্চিত করার আইনগত দায়িত্ব সরকারের, বিজ্ঞাপন তারকাদের নয়। কাজেই সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ‘নিরাপদ’ বা ‘বৈধ’ বলে সার্টিফিকেট দেওয়া কোনো পণ্য বা সেবা যদি জনগণের জন্য ‘অনিরাপদ’ বা ‘ক্ষতিকর’ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার জন্য অর্থের বিনিময়ে বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া তারকাদের সমালোচনা করার চেয়ে অনুমোদন প্রদানকারী সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা বেশি জরুরি। ফেসবুক থেকে