অনিক কুমার কর্মকার: বেশ কিছু প্রাচীন কলম পাওয়া গেছে লন্ডনের ব্লুমবার্গ অফিসের ইউরোপিয়ান হেডকোয়ার্টারের মাটির তলা থেকে।
এগুলোকে কলম বলা হলেও আধুনিক কলমগুলো থেকে অনেকটা ভিন্নরকম দেখতে।তবে লেখার কাজেই ব্যবহৃত হতো এগুলো তা নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। এ কলমগুলো লোহা দিয়ে তৈরি।
এসব কলমকে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ ‘স্টাইলাস’ নামে ডাকছেন।২০০ খ্রিস্টাব্দ বা এর আগের অর্থাৎ রোমান যুগের এসব কলম। প্রাচীন কালে প্যাপিরাসে ও মোমের আস্তরণ যুক্ত কাঠের ট্যাবলেট এবং শিলালিপিতে লেখার কাজে ব্যবহৃত হত এই স্টাইলাস।
এখন পর্যন্ত সেই সময়ের ২০০টি স্টাইলাস পাওয়া গেছে যার মধ্যে কেবল ৪টিতে লেখা ছিল তার প্রাপকের উদ্দেশে বিশেষ একটি বার্তা।
ওই চারটি কলমের ওপর খোদাই করা লেখাই অন্যসব কলম থেকে এদের আলাদা করেছে যা নজর কেড়েছে ঐতিহাসিকদের।
সে বার্তা থেকে ইতিহাসবিদরা জানতে পেরেছেন, সে সময়ের যুদ্ধবাজ রোমানরা কতটা কৌতুকপ্রিয় ও আবেগপ্রবণ ছিল।
প্রাচীন সেই চারটি কলমে খোদাই করে লেখা রয়েছে, ‘আমি শহর থেকে এসেছি। তোমাকে স্বাগত জানানোর জন্য একটি উপহার নিয়ে এসেছি, যার মুখটি খুবই তীক্ষ্ণ। এই তীক্ষ্ণ মুখই তোমাকে আমার কথা মনে করিয়ে দেবে। দীর্ঘ রাস্তা অতিক্রম করে এই মুহূর্তে আমার সব ফুরিয়ে গেছে। তাই সামর্থ্য না থাকায় এর থেকে বেশি কিছু দেয়া সম্ভব হলো না। আশা করি ভাগ্য সহায় হলে এরকম আরও উপহার দিতে পারব তোমাকে। ’
খুদে বার্তাটি মূলত কবিতার ভাষায় লেখা ছিল আর মজা করে চমৎকারভাবে উপহার গ্রহণকারীকে দাতা বলেছেন যে, ‘পকেটে টাকা না থাকায় সামান্য একটি কলম উপহার দিলাম।’
২০০০ বছর আগে রোমানদের মধ্যে যে এত ভাল কৌতুক ও সৌজন্যবোধ ছিল তা ভেবে অবাক বিশেষজ্ঞরা।
খুদে বার্তাটি থেকে বোঝা যায় যে, দীর্ঘ সফর অতিক্রম করে রোম থেকে লন্ডনে এসেছিলেন ওই ব্যক্তি। এতো দীর্ঘ পথে তার সঙ্গে থাকা সমস্ত টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। তবুও লন্ডনের প্রিয় বন্ধুকে উপহার দিতেই হবে। তাই উপহার দেয়ার জন্য বেশি টাকা না থাকায় একটি কলম কিনে বিষয়টি মজার ছলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে লন্ডনের ব্লুমবার্গ অফিসের ইউরোপিয়ান হেডকোয়ার্টারের মাটির তলা খননকার্য চলাকালীন পাওয়া যায় ১৪ হাজার শিল্পকর্ম। তাদেরই মধ্যে অন্যতম ২০০০ বছর পুরনো রোমান সভ্যতার এই কলম ।
তথ্যসূত্রঃ
https://edition.cnn.com/.../roman-stylus.../index.html