কামরুল হাসান মামুন: সব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা দিয়েছেন।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানতম ইনগ্রেডিয়েন্টস হলো শিক্ষক। ধরুন শিক্ষকরা হলো চিনি, শিক্ষার্থীরা হলো পানি আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো গ্লাস। আমরা কত গ্লাস শরবত বানাবো সেটা কি প্রধানত কত পরিমান পানি আছে সেটা দিয়ে ঠিক করব নাকি কতটুকু চিনি আছে সেটা দিয়ে ঠিক করব। মানতেই হবে শরবত বানানোর প্রধানতম ইনগ্রেডিয়েন্টস হলো হলো চিনি বা শিক্ষক। কত গ্লাস শরবত বানাবো তা ঠিক করার জন্য প্রথমে দেখব ঘরে কতটুকু চিনি আছে।
বাংলাদেশের প্রধানতম সংকট হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারে এমন শিক্ষকের চরম সংকট। এখন আমাদের দেশে যেই পরিমান চিনি অর্থাৎ মানসম্পন্ন শিক্ষক আছে সেই পরিমান চিনি দিয়ে বড়জোর ১০ থেকে ১৫ গ্লাস শরবত অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় বানানো যায়। সেই জায়গায় আমরা পানি ঢালছি আর গ্লাসের পর গ্লাস শরবত বানাচ্ছি। এক পর্যায়ে কি আর এগুলো শরবত হবে? ঠিক এটিই ঘটেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এগুলোকে কলেজ বললেও বেশি বলা হয়।
এইরকম পরিস্থিতিতে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী বলে জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় বানাবে। এর অর্থ হলো বিশ্ববিদ্যালয় কি হয় এটাই তিনি জানেন না অথবা উনি এত অতি চালাক যে উনি বুঝে গেছেন দেশের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় কি তা বুঝে না। ফলে যা ইচ্ছে তা বানিয়েই শরবত হিসাবে চালিয়ে দিচ্ছে। এই সামান্য হোমওয়ার্কটা যদি করতে না পারেন দেশ চালাবেন কিভাবে?
লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :