রিফাত হাসান: জিহাদ যখন ফতোওয়া, মানে ডিসকোর্সের বিষয় হলো, তখন ব্রিটিশ ভারতে মুসলমানদের ওপর জিহাদ ফরজ হলো কিনা, তাই নিয়া প্রচুর ফতোওয়া চালাচালি হইতো। এর বহু আগে, যখন ডিসকোর্স তেমন কইরা দাঁড়াইতে পারেনি, তখন শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্যের কোনো এক অত্যাচারী রাজা গোবিন্দর কথা আমরা জানি, গরুর মাংস খাওয়ার খবর চাউর হওয়ার পরে বোরহান উদ্দীন নামের এক মুসলমানের পুত্রহত্যা করে গোবিন্দ, এর প্রতিকারার্থে বুরহানুদ্দীনের অনুরোধে এইখানে হজরত শাহজালালের আগমন ঘটে এবং সেই রাজা গোবিন্দের প্রলয়ঙ্করি জাদুবান ও প্রবল সৈন্যদলের বিরুদ্ধে তার অলৌকিক শক্তি দিয়ে জিহাদ কইরা পরাজিত করেন। আমরা এই কাহিনি ছোটবেলায় অনেকেই পইড়া থাকবো। এই ঘটনায় মুসলমানদের ডিসকোর্স বা ফতোওয়ার দরকার পড়েনি। আবার, এখন অন্যদিন, সেই ফতোওয়া ও ডিসকোর্সের কালও শেষ। স্রেফ রাখ ঢাকহীন ক্ষমতা, ট্রাম্পের উত্থানের কালে কইছিলাম।
তো এইকালে আপনি ভারতে ফ্রিজে গোমাংস রাখার অপরাধে পিটিয়ে হত্যা, জয় শ্রীরাম বা হনুমান কইতে বাধ্য করা ও কথায় কথায় নানান ছুঁতোয় মুসলমানদের অত্যাচার ও হত্যারে কোন তরিকায় মোকাবেলা করবেন? দেখা যাচ্ছে, ঠিক আগের কোনো তরিকা এখানে কাজ করছে না আর। নতুন তরিকা লাগবে। বড় বড় মুফতিরাও আর ফতোওয়া বা জিহাদ ফরজ কিনা, এ ধরনের আলাপে অনিচ্ছুক, আইএসের মতো বহুজাতিক সংগঠনগুলো এখন ‘জিহাদ’ বইলা একটা ব্যাপারের দায় নিছে। ভারতের কোনো কোনো মুফতি বরং আলাপ করছেন যে, ভারতের মুসলমানেরা গরুর মাংস না খাওয়া সহিষ্ণুতা ও মহানুভবতার পরিচয় হবে বরং। গরুর মাংস, মানে খাদ্যাভ্যাসের এমন একটা সমাধান করা গেলো না হয়, মুসলমানরা সেক্রিফাইস করবেন এবং মহানুভব হবেন। কিন্তু জয় শ্রীরাম বা জয় হনুমানের যে অত্যাচার ও খুন খারাবি, তারে এই নয়া ডিসকোর্সহীন সময়ে ভারতের মুসলমানরা কীভাবে মোকাবেলা করবে? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :