মুরাদুল ইসলাম: এলএসডি খাওয়া ছেলেদের ছবি দেখে নাকি অনেকে ক্র্যাশ খাইতেছেন, এটা নিয়া অনেকে ট্রল করতেছেন। আমি ক্র্যাশ খাওয়া বা এ সংশ্লিষ্ট মন্তব্য দেখিনি। তবে ট্রল দেখে ধরে নিলাম আসলেই অনেকে ক্র্যাশ খাইছেন এবং সেই অনুভূতির কথা ফেসবুকে শেয়ার করছেন। এভলুশনারি থিওরির একটা হাইপোথিসিস হইলো হ্যান্ডিক্যাপ প্রিন্সিপল, যেখানে ধারণা করা হয় বিভিন্ন প্রাণিরা ‘কস্টলি সিগন্যাল’ দিয়া বিপরীত লিঙ্গরে আকর্ষণ করে। কস্টলি সিগন্যাল, যেটা করতে গিয়া প্রাণিটার ক্ষতি বা কষ্ট হয়, কিন্তু এইটা করেও যে সে টিকে আছে সেটা তার জিনের স্বক্ষমতার সিগন্যাল হিসাবে কাজ করে। এর বিখ্যাত উদাহরণ, পুরুষ ময়ূরের বিশাল লেজ। জ্যারেড ডায়মন্ড থার্ড শিম্পাঞ্জিতে এই হাইপোথিসিসের ওপর ভর করেই মানুষের নিশা করার (এডিকশন) এক ব্যাখ্যা দিছিলেন, যে এইটা একটা ‘কস্টলি’ সিগন্যাল হিসাবে কাজ করে। যেমন এলএসডি খাওয়া পোলারা হাসতেছেন, এইখানে সিগন্যাল হইলো সে এলএসডি নিয়াও টিকে আছে, বিপরীত লিঙ্গের কাছে আকর্ষক।
মানুষের বিপজ্জনক কাজ করা, যেমন রাফ ড্রাইভ করা বা উচ্চতা থেকে লাফাইয়া পড়া বা রাফ আচরণ, মারামারি এগুলো কস্টলি সিগন্যাল হিসেবে কাজ করে। ধরেন, এক ইয়াং পোলা রাফ বাইক চালান। তাতে এক ইয়াং মেয়ে তার প্রতি আকৃষ্ট হইতে পারেন। কারণ এই রাফ বাইক চালানো তার সক্ষমতার সিগন্যাল, যার ধারা সেই জঙ্গলের সমাজ থেকে চলে আসছে। জঙ্গলের সমাজে পুরুষেরা ফাইট বা শিকার করে নিজেদের সক্ষমতার সিগন্যাল দিতো এবং এর ওপর ভিত্তি করেই মেয়েরা তাদের সঙ্গে মিলে বাচ্চা উৎপাদনে রাজি হইতেন। দিন শেষে জিনিসটা হচ্ছে ভবিষ্যৎ বাচ্চার জন্য। যাতে সে ভালো জিন পায় এবং প্রতিকূল দুনিয়ায় বেঁচে থাকে, ও প্রজন্মান্তরে নিয়া যায় জিনরে। আবার উপরোক্ত ক্ষেত্রে, ওই ইয়াং পোলার মা ক্ষিপ্ত হইতে পারেন। পোলারে নিষেধ করতে পারেন বা করেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। কারণ এখানে তার পুত্রধন হইলো তার জিন, যে মইরা যদি যায় ফুটানি দেখাইতে গিয়া, তাহলে কে আগাইয়া নিবে তার জেনেটিক এজেন্ডা। এই ব্যাখ্যাই একমাত্র ব্যাখ্যা না, বা আল্টিমেট ট্রুথ না এই বিষয়ে। মানুষ কেন কী আচরণ করে তা জটিল। কিন্তু ‘সিগন্যালিং’ একটা কাজের মডেল চিন্তার ক্ষেত্রে। ফেসবুক থেকে