রাজু চৌধুরী:[২] চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট পোস্তারপাড় এলাকার আবুল খায়ের গ্রুপের একটি গুদাম থেকে ডাকাতি হওয়া ৩৩ লাখ টাকার পণ্য উদ্ধার এবং ডাকাতির মাল বিক্রির নগদ ৬৮ হাজার টাকা এবং আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধানসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা ও ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
[৩] সোমবার (৩১ মে ) দুপুরে নগরীর ডবলমুরিং মডেল থানায় এই ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো. আব্দুল ওয়ারিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ডাকাত দলের প্রধান নূর নবী, ডাকাতির মাল ক্রেতা শাহজাহান এবং এনায়েত উল্যাহ শান্ত।৭ মে তারিখে ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথেই মাননীয় পুলিশ কমিশনার নির্দেশে ডবলমুরিং মডেল থানার ৫টি টিম এবং ডিবি’র একাধিক টিম কাজ করে।
[৪] উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম), সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) ও মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমার নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীন, এবং সঙ্গীয় অফিসার এসআই অর্নব বড়ুয়া, এসআই কিশোর মজুমদার, এসআই শরীফ উদ্দিন, এসআই মোহাম্মদ তারেক আজিজ, এসআই এইচ এম ওয়াহিদুল্লাহ, এএসআই কাজী সাইফুল, এএসআই সাদ্দাম হোসেন এবং ডিবির এসি গোলাম সরোয়ার, ইন্সপেক্টর প্রিটন সরকার, এসআই মোঃ জুয়েল চৌধুরী সহ আরো অফিসার ফোর্স পুলিশ হেডকোর্য়াটার্স এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানার বারবকুণ্ড এলাকা থেকে ডাকাতির ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ও ডাকাত মোঃ নুর নবী’কে গ্রেপ্তার করা হয়।
[৫] উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো. আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, মাত্র ৯ মিনিটেই আবুল খায়ের গ্রুপের ৩৩ লাখ টাকার সিগারেট ডাকাতি করে এই চক্রটি। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ৪ দিনে চক্রটিকে ধরতে সমর্থ হয় নগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি দলসহ ডবলমুরিং থানা পুলিশ। তিনি আরও জানান, এই চক্রটিতে ২০-২৫ জন সদস্য কাজ করে। তাদের দলনেতা হলো নূর নবী। তারা প্রথমে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে রেকি করে। পরে দারোয়ানকে বেঁধে সাথে নিয়ে আসা মিনি ট্রাকে ডাকাতির মালামাল নিয়ে চলে যায়।
[৬] এর আগে বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করে এই চক্রটি। এর আগে ডাকাতি করতে গিয়ে দু্ইজনকে হত্যাও করে এই চক্রের সদস্যরা।এর মধ্যে চট্টগ্রামের কামাল বাজারে রফিক স্টোরে ডাকাতি করে ৩২ লাখ টাকা মূল্যের ৭৩ কার্টন সিগারেট, সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীতে আফজাল স্টোরে ২২ লাখ টাকা মূল্যের ৬৩ কার্টন সিগারেট ও নগদ দেড় লাখ টাকা, চাঁদপুরের কচুয়ায় সাইফুল স্টোরে ২২ কার্টন সিগারেট ও নগদ সাড়ে ৪ লাখ টাকা এবং কক্সবাজারের টেকনাফে ২২ লাখ টাকার সিগারেট লুট করে চক্রটি।
[৭] আরো জানান, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা এলাকায় আকিজ বিড়ির গোডাউন, চট্টগ্রামের রাউজান, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, সিলেট, সাভার, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জসহ ১০টি জেলায় গত ৭ বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকার সিগারেট ডাকাতি করেছে চক্রটি। এসব ডাকাতির ঘটনায় তাদের সাথে ২ জন খুনও হয়েছেন। খুন হওয়া দুইজন হলেন, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা এলাকায় একজন ও কুমিল্লাতে একজন।
[৮] ডবলমুরিং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, তথ্য যুক্তির সহায়তায় প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানা এলাকার বাড়বকুণ্ড থেকে ডাকাতির মূলহোতা নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার পশ্চিম বড়ডেল গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মোঃ নুর নবী (৩০)নূর নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডাকাতির মালামাল গ্রহণকারী কুমিল্লা সদরের পশ্চিম বাগিছাগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মোঃ শাহজাহান (৬০) এবং তার ছেলে মোঃ এনায়েত উল্লাহ শান্তকে।
[৯] তন্মধ্যে শান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী।থেকেই ডাকাতি হওয়া আবুল খায়ের গ্রুপের ৯২ কার্টন সিগারেট ও সিগারেট বিক্রির ৬৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।তিনি আরও বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকটি ডাকাতি পণ্যের চালান কিনেছিলো মোহাম্মদ শাহজাহান ও তার ছেলে এনায়েত উল্লাহ শান্ত। মূলত কম দামে বেশি লাভ করার জন্য তারা এই চোরাই পন্য কিনে থাকে।