জাকারিয়া চৌধুরী: ‘আমার চলতি জীবনযাপন পদ্ধতিতে হাতের কাছে কোনো রেকর্ড, দলিল, ডকুমেন্ট, কাগজপত্র রাখার ব্যবস্থা নেই। সব চালাই স্মৃতি থেকে। তাই বিশদ বলতে পারবো না। যেটুকু মনে পড়ে তাই বলি।
উনার ১৯ দফা কর্মসূচিতে ১০ নম্বরে বলা ছিল: "সকল দেশবাসীর জন্য ন্যূনতম চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা।" সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি বেয়ারফুট ডাক্তার বা গ্রাম ডাক্তার কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। প্রতিটি গ্রামে সাধারণ মানুষ যাতে ন্যূনতম প্রাথমিক চিকিৎসা পায় তার জন্য লাখ লাখ গ্রাম ডাক্তার প্রশিক্ষণ ও পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করেন। স্বাস্থ্য ক্যাডার প্রবর্তন করেন। জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম জোরদার করেন। ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় শিশুদের ঘাতক ব্যাধি নির্মূলে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ইপিআই প্রবর্তন করেন। ওরস্যালাইন বিতরণকে একটা সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিয়ে কলেরা-ডায়রিয়ার মহামারি রোধ করা হয়। নার্স, মিডওয়াইফ ট্রেনিং। প্রতি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র স্থাপন এবং প্রতি থানায় (এখন উপজেলা) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন। বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা হোমিও ও ইউনানি শিক্ষার ব্যবস্থা প্রসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ। প্যারামেডিক্স ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ জোরদার। নতুন হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন, বেড বৃদ্ধি, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংযোজন। জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা সেবাকে গুরুত্ব দিতে ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও এম এ মতিনের মতন লোকদের রাষ্ট্রক্ষমতা ও নীতিনির্ধারণের শীর্ষস্তরে নিয়ে আসা।
এটুকুই মনে পড়ছে। দেখো কাজে লাগে কিনা। চেক করে নিও’।
মেসেজটা আমি হুবহু তুলে দিলাম অথচ তার নাম উল্লেখ করলাম না ! কেমন হয়ে গেল না ! আমার ভালোবাসা বিশ্বাস তোমার নিকট মুর্খামি হইতে পারে। আমি যার কথা মানিয়া লই আমি আগে তারে মানিয়া লই। যিনি এসব বলেছেন আমি তার শতভাগ বিশ্বাস করি। এখন ক্রস চেক করব তার কথামত।
চলুন দেখি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার ১০-এ কি ছিল। হ্যাঁ, চেকড। ঠিকাছে। জিয়া এর মাধ্যমে ঠিক কি লক্ষ্য অর্জন করতে চেয়েছেন বলে মনে করেন। জিয়ার আমলে বাংলাদেশে টোটাল ডক্টর কতজন ছিল জানেন ?
উইকি থেকে একটা ডাটা দেখুন। তাহলে বুঝতে পারবেন কেমন পরিবেশে জিয়া দেশের হাল ধরেছিলেন। কি স্বাস্থ্য, কি শিক্ষা, কি কৃষি ব্যাবস্থা !সবকিছু কেমন ছন্নভিন্ন অবস্থায় ছিল।
এ
সময়ে দেশে ১০-১৫ হাজারের বেশি রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছিল না। মেডিক্যাল কলেজ, সদর হসপিটাল গুলোর বাইরে ঢাকা ছাড়া তেমন কোথাও বেসরকারি খাতে তেমন কোন চিকিৎসা ব্যাবস্থা ছিল না। উপরের ডাটা টা দেখুন প্লিজ। এদেশে তখন মাতৃ মৃত্যু ৩০ এর উপরে ছিল। আমরা বইয়ে পড়েছি হাজারে ৩৫ জন মারা যায় এখানে দেখানো হয়েছে প্রায় ১৭ জন। এসব কাজ সরকারগুলো সব সময়েই করে থাকে। এখন যেমন করোনা নিয়ে সরকারী হিসেব আর বেসরকারী হিসেবের পার্থক্য ভারতে বেড়ে গেছে যোজন যোজন দূর। ৭৬ পুর্ববর্তী সরকারের দেয়া ডাটা-ই থাকবে উইকিতে যদি না খুব বড় কোন কেলেংকারি সামনে আসে। যা বলছিলাম- আগে চাই প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাবস্থা অন্তত প্রান্তিক মানুষের জন্য। আর সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি বেয়ারফুট ডাক্তার বা গ্রাম্য ডাক্তার তৈরির কর্মসুচি হাতে নেন। মানুষ যেন সাধারন রোগ বালাই থেকে বাঁচতে পারে। এটলিস্ট যেন প্রাইমারি কিউরের একটা নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। তিনি তাদের বেকার বসিয়ে রাখলানে না। প্রশিক্ষন শেষে তাদের পোষ্টিংযের ব্যাবস্থা করলেন। এদেশের নতুন প্রজন্ম যাদের বয়স ৪০ ছুই ছুই তারা-ই বা কত’টা জানে ? যারা জিয়ার পাশে ছিলেন তাদের মধ্যে আমি একজনকে বেছে নিয়েছি যাকে আমি শতভাগ বিশ্বাস করি। তার কথা গুলো-ই ইনিয়ে বিনিয়ে বলছি। নিজের বলার কিছু নেই। আমি এসব দেখিনি।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য যে একটা আলাদা স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস প্রয়োজন তার স্বপ্ন দেখা এবং বাস্তবায়ন তো জিয়ার হাত ধরে-ই।
জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এর জন্য পরিবার পরিকল্পনা ব্যাবস্থা প্রবর্তন করেন শহীদ জিয়া। স্লোগান ছিল,- দু’টির বেশি সন্তান নয় একটি হলে ভাল হয়।
আমার বলা শেষ হয়েছে। শেষ হয়নি জিয়ার কীর্তিগাথা। আর যোগ্য লোককে যোগ্য চেয়ারে বসিয়ে তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সার্ভিস বের করে আনতেন জিয়া। ওরস্যালাইন বিতরণকে একটা সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিয়ে কলেরা-ডায়রিয়ার মহামারি রোধ করা হয়।
নার্স, মিডওয়াইফ ট্রেনিং। প্রতি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র স্থাপন এবং প্রতি থানায় (এখন উপজেলা) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন। বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা হোমিও ও ইউনানি শিক্ষার ব্যবস্থা প্রসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ। প্যারামেডিক্স ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ জোরদার। নতুন হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন, বেড বৃদ্ধি, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংযোজন। জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা সেবাকে গুরুত্ব দিতে ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও এম এ মতিনের মতন লোকদের রাষ্ট্রক্ষমতা ও নীতিনির্ধারণের শীর্ষস্তরে নিয়ে আসা।
সমস্যা হলো জিয়ার ছেলেরা যারা দেশজুড়ে বিএনপি’র পতাকা নিয়ে উড়ে বেড়ায় তারা জিয়ার জন্ম, মৃত্যুর তারিখটা পর্যন্ত জানে না। জানতেও চায় না।
ডা. জাকারিয়া চৌধুরী: কলাম লেখক