কামরুল হাসান মামুন: এই বিশ্ব শক্তির পূজা করে। গত কয়েক বছরে আরব দেশগুলোর বেশ কয়েকটা রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে যেমন বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুদান এবং মরক্কো। এছাড়া সৌদি আরব অনেক আগে থেকেই গোপনে ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে। এমনকি গত বছর ইসরাইলের মন্ত্রী নেতৃত্বে একটি দল সৌদি আরবে যায় এবং গোপন বৈঠক করে। আমেরিকাকে সৌদির পাশে রাখার জন্য ইসরাইলকে অনেক আগে থেকেই লবিস্ট হিসাবে ব্যবহার করেছে এবং এর জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে। সেই ডলার দিয়ে ইসরাইল অস্ত্র কিনেছে এবং বানিয়েছে যা এখন ব্যবহার করছে। নতুন করে আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক ইসরাইলকে আজকের দানবে রূপান্তর করেছে। এখন তাদেরকে আর কিছু ভাবতে হয় না। বিশ্বমোড়ল আমেরিকাতো আছেই। তার সাথে আছে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যারা শক্তিশালী যেমন মিশর, তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরাও কেউ কিছু বলবে না। আজকের ইসরাইলকে কাউকে কেয়ার করতে হয়না।একদম ফ্রীহ্যান্ড।
প্রশ্ন হলো সৌদি আরব কি ফিলিস্তিনের পাশে? সংযুক্ত আরব আমিরাত কি কি ফিলিস্তিনের পাশে? মিশর কি কি ফিলিস্তিনের পাশে? তুরস্ক কি কি ফিলিস্তিনের পাশে? বাহরাইন কি ফিলিস্তিনের পাশে? মরক্কো কি ফিলিস্তিনের পাশে? কেউ না। যারা প্রতিবাদ করছে তারা হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মত কিছু রাষ্ট্র। পৃথিবীতে কেউ এদের পুছে। এইজন্যই বলি। শিক্ষায় দীক্ষায় উন্নত হলে অর্থনীতিতেও উন্নতি হয় আর তার সাথে সামরিক শক্তিতেও উন্নতি আসে। কেবল তখনই প্রতিবাদগুলো ইফেক্টিভ হবে। নতুবা এই প্রতিবাদ ওরা এক কান দিয়ে শুনবে অন্য কান দিয়ে বের করে দিবে। তবুও অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যেতেই হবে। ইয়েমেনে যে সৌদি আরব অন্যায়গুলো করছে তার কি যথাযথ প্রতিবাদ করেছি? আসলে সারা বিশ্বে মুসলিমরা এখন কেবল মারই খাবে কারণ অর্থেবিত্তে বড় হলেও জ্ঞান বুদ্ধিতে খাটো। তাই অন্য রাষ্ট্র এক মুসলিম দেশের সাথে আরেক মুসলিম দেশের কলহ বিবাদ সহজেই লাগিয়ে রেখে অস্ত্র বিক্রি করা যায়। আমেরিকা নিজ দেশে অস্ত্র বিক্রির জন্য অস্ত্র বিক্রয় সকলের জন্য উম্মুক্ত রেখেছে। দুইদিন পর পরই গণ শুটিং-এর সংবাদ পাই। তবুও এই আইন বদলায় না। আর অন্য দেশে অস্ত্র বিক্রির জন্য ঝগড়াবিবাদ লাগানো বন্ধ করবে কেন?
গতকাল যখন বম্বিং করে একটি ভবন ধসিয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখছিলাম খুবই খারাপ লাগছিল। এইসব দৃশ্য দেখলে মুসলিম দেশের মানুষের মাঝে রাগ সৃষ্টি হবে যা উগ্রবাদী হওয়ার পথে ধাবিত করবে কারণ। শক্তিহীনদের বদলা নেওয়ার এটাই একমাত্র পথ। তবে এই রাগকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হলে লেখাপড়া করে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার কোন বিকল্প নাই। উদাহরণ ইসরাইল নিজেই। আজকের ফিলস্তিনীরা ১৫ বছর আগের ফিলিস্তিন থেকে অনেক দুর্বল। আর আরব দেশগুলোর কয়েকটি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করায় ফিলিস্তিনিরা আরো অসহায় হয়ে পরে।