শওগাত আলী সাগর: [১] বাংলাদেশে দোকান পাট খুলে দিতে না দিতেই কি মানুষজন হুমড়ি খেয়ে পরতে শুরু করেছে? তার মানে কী- মানুষের হাতে, পকেটে টাকা আছে, সেই টাকা খরচ করার জন্য তাদের হাত নিশপিশ করছে। মহামারী, মানুষের মৃত্যু- এসবও মানুষকে কেনাকাটা, উৎসব থেকে নিবৃত্ত রাখতে পারছে না। তা হলে ‘জীবন আর জীবিকার’ এই যে তর্ক- বিতর্ক, সেগুলো কোত্থেকে এলো। কারা আনলো। লকডাউন হলেই যে চারদিকে শোরগোল ওঠে, মানুষ মরে যাচ্ছে, তাদের টাকা দাও, খাবার দাও লঙ্গরখানা খোলো- এই সব হাহাকার তা হলে কাদের জন্য। দোকানপাট খুললেই যখন ‘জরুরি নয়’ এমন কেনাকাটার জন্যও মানুষ হুমড়ি খেয়ে পরে, তার মানে তো তাদের খাওয়া পরার সমস্যা নেই।
[২] আমার প্রায়শঃই মনে হয়েছে ‘জীবন- জীবিকার’ তর্কের শোরগোলে স্বাস্থ্যবিধি মানার আবেদনটাকে আমরা চাপা দিয়ে ফেলেছি। জীবিকার সমস্যাটা এতো বেশি উচ্চারিত হয়েছে যে এটি যে একটি স্বাস্থ্য সমস্যা সেটি মানুষকে আমরা প্রায় ভুলিয়েই দিয়েছি।অথচ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্যই একটি সামাজিক আন্দোলন হতে পারতো। সেটি মিডিয়া, শিক্ষিত সমাজ, সামজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠন, রাজনৈতিক কর্মীরা সবাই মিলেই করতে পারতেন। [৩] এই যে দোকানপাট খুলে দেয়া হয়েছে, মানুষের জীবিকার দাবিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অসুবিধা নেই- জীবনের চেয়ে যখন কেনাকাটা, অর্থব্যয় গুরুত্বপূর্ণ, তাদের সেটা করতে দিন। তাদের কারণে পাশের অন্যমানুষগুলো, যাদের কাছে জীবনটাই আসলে গুরুত্বপূর্ণ, তাদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে একটি সামাজিক আন্দোলনের অন্তত চেষ্টা হোক। মানুষ অন্তত জানুক- শপিং মল আর হাসপাতালের আইসিইউর দূরত্বটা খুব বেশি না। শপিং মলে পছন্দের পণ্যসামগ্রী পর্যাপ্ত থাকলেও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় বেড, আইসিইউর ঘাটতি আছে। লেখক : সিনিয়ার সাংবাদিক।
আপনার মতামত লিখুন :