আতিক খান: ভারতের উপর পুরো আস্থা রাখলে আশাভঙ্গ হতে টাইম লাগে না। তাদের কথা আর কাজে কোনো মিল নেই। তিস্তা, পিয়াজ, কুরবানির গরু, সীমান্ত হত্যাসহ আরো অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যাবে। মোট ৩ কোটি ডোজ দেওয়ার কথা থাকলেও ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিয়েছে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ। এরপর প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ দেওয়ার কথা থাকলেও ভারত আর পাঠায়নি। তাই বাংলাদেশে ২য় ডোজ টিকার একটা সংকট আর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। মে ১৫ এর পরে দেশে মজুদ করা ২য় ডোজ দেয়ার টিকা শেষ হয়ে যাবে। তাই সমস্যা সমাধানে কুটনীতি শুরু করেছে বাংলাদেশ। ভারত চুক্তি অনুযায়ী টিকা রপ্তানি না করে আভ্যন্তরীণ চাহিদাকে আগে প্রাধান্য দিবে ঘোষণা দেওয়ার পর বাংলাদেশ রাশিয়া আর চীনের কাছে সাহায্য চেয়েছে। রাশিয়ার সাথে ইতিমধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। প্রথমে বাংলাদেশ টিকা দেশে ব্যবহারের জন্য আমদানি করবে। এরপর রাশিয়া, ফর্মুলা গোপন রাখার শর্তে যৌথ উদ্যোগে টিকা উৎপাদনের অনুমতি দিবে। প্রয়োজন মিটলে বাংলাদেশ এই টিকা বিদেশে রপ্তানি করতে পারবে। এছাড়া চীন ৬ লাখ টিকা দেওয়ার সাথে সাথে টিকা সংরক্ষণাগার তৈরিতেও সাহায্য করবে জানিয়েছে। আর বাংলাদেশ চীনের অনুরোধে নতুন একটা প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছে।
ইমার্জেন্সি ভ্যাকসিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড ফর সাউথ এশিয়া’ নামের এই প্ল্যাটফর্মে চীন, বাংলাদেশ ছাড়া বাকি চারটি দেশ হচ্ছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। তারা এই প্লাটফর্ম হতে যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা সংগ্রহ করবে। এদিকে লকডাউন ২৮ তারিখের পর হতে উঠে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে সবই খুলে দেওয়া হবে। আর ২৫ তারিখ হতে কিছু শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হচ্ছে সব মার্কেট আর শপিং মল। দুই ডোজ টিকা নিলেই আপনারা আর করোনা আক্রান্ত হবেন না, এটা কিন্তু ভ্রান্ত ধারণা। টিকা আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাবে মাত্র। পরিচিত এক ভদ্রলোক দুই ডোজ নিয়েও সম্প্রতি আক্রান্ত হয়ে ৭-৮ দিনের মাথায় ইন্তেকাল করেছেন। একজন ভদ্রমহিলার ২য় ডোজ নেওয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছিল। হাতে আর তালুতে লক্ষ্মণ দেখার সাথে সাথে রক্ত তরল করার মেডিসিন শুরু করায় রক্ষা পেয়েছেন। এগুলো হয়তো খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনা।
তবুও সতর্কতা হিসেবে জানালাম যাতে বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে না উঠেন। তাই টিকা নিন, কিন্তু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়েও সতর্ক থাকুন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ও হ্যাঁ, বাংলাদেশের চীন-রাশিয়া কূটনীতি দেখে, ভারতীয় হাইকমিশনার গতকাল জানিয়েছেন, ভারত প্রতিশ্রুত টিকা সরবরাহে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে এবং সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। টিকা সমাচার। ফেসবুক থেকে, মামুন