শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:০৭ সকাল
আপডেট : ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ০৪:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব করোনাকাল: হ্যাপি লকডাউন অ্যান্ড দ্য সাম গুড নিউজ

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল: দ্বিতীয় দফায় বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ। সরকারি কাগজপত্রে এটি কঠোর বিধিনিষেধ আর মানুষের মুখে-মুখে তা লকডাউন। ছোটবেলায় এসএসসিতে বাংলা পরীক্ষায় নিয়মিত প্রশ্ন আসতো ‘নামকরণের সার্থকতা’ লেখার। সেই কমন প্রশ্নটির উত্তর লিখতে গিয়ে শিখেছিলাম, ‘যদিও শেক্সপিয়ার বলেছেন নামকরণে কী আসে যায়...’। কাজেই লকডাউন না কঠোর বিধিনিষেধ তাতে আসে যায় সামান্যই। তবে এর সাফল্য-ব্যর্থতার আসা-যাওয়াটা নির্ভর করে আমরা এর নির্দেশনাগুলো কতোটা তালিম করবো তার ওপর। আমরা ভালো থাকবো ঘরে থাকলে, অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে না গেলে আর গেলেও প্রয়োজনের চেয়ে এতোটুকুও বেশি সময় ঘরের বাইরে না থাকলে। ভালো থাকবো যদি আমরা ঘরের বাইরে মাস্কটা থুতনিতে না ঝুলিয়ে বা পকেটে ভরে না রেখে, তা দিয়ে নাক-মুখটা ভালোভাবে ঢেকে রাখি আর ঘরে-বাইরে যেখানেই থাকি না কেন সাবান-পানি দিয়ে বারবার হাতটা ধুতে যদি ভুলে না যাই। আর তাওতো খুব বেশি দিন না। বড়জোর আর দিন কয়েক, হয়তো বা আর একটি সপ্তাহ বেশি বা কম।

আমাদের পেটটা খালি থাকলে চলবে না, সামনে আমাদের উদ্যাপন করতে হবে ঈদটাও। এটাই বাস্তবতা, এর বাইরে অন্য কোনো কিছু থাকতে পারে না। কিন্তু অর্থনীতিটাকে যদি আমরা চালু রাখতে চাই, চাই সীমিত পরিসরে হলেও ঈদটাকে অন্তত একটু হলেও উদ্যাপন করতে, তাহলে তো আমাদের ভালো থাকতেই হবে। আর ভালো থাকতে হলে আমাদের মানতে হবে বিধি-নিষেধগুলো আর থাকতে হবে যার যার ঘরে। কারণ আমরা ভালো থাকলেই ভালো থাকবে আমাদের স্বজন আর সমাজ, আর সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবো আমরা সবাই। আর আমাদের এই নিয়ম মানামানিতে লাভটাও কিন্তু এরই মধ্যে দৃশ্যমান। প্রতিবেশি ভারতে গত ২১ এপ্রিল নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩,১৪,৮৩৫ জন যা একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড।

ওই একই দিন ভারতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২,১০৪ জন মানুষ। অথচ ২১ তারিখেই পরপর দ্বিতীয় দিনের মত বাংলাদেশে কোভিডে মৃত্যুবরণকারী মানুষের সংখ্যা নেমে এসেছে নব্বইয়ের ঘরে, যা এর দুদিন আগেও পরপর চারদিন ছিল একশর ঘরে। আর তার দু’দিন আগেইতো আমরা ছুঁয়েছিলাম আমাদের দেশে কোভিডের মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা ‘১১২’। পাশাপাশি কোভিডের যে দ্বিতীয় ওয়েবে এদেশে নতুন রোগীর শনাক্তের হারটি লাফিয়ে লাফিয়ে ২৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, তাও কিন্তু ২৩ তারিখে নেমে এসেছে ১৪ শতাংশের কোঠায়। আশা করা যায় আর সপ্তাহ দু’য়েক যদি আমরা ধৈর্যটা ধরতে পারি তাহলে কোভিডের নতুন রোগী শনাক্তের হার আর মৃত্যুর সংখ্যা, এই দুটোই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

ভালো খবর আছে আরো। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে যারা এদেশে কোভিডের টিকার প্রথম ডোজটি নিয়েছেন তাদের কেউ কেউ কোভিডে আক্রান্ত হলেও তাদের মধ্যে ৮২ শতাংশ মানুষেরই হাতপাতালে যাওয়ার প্রয়োজনই পড়েনি। আর যে ১৭ শতাংশের মতো মানুষকে টিকার প্রথম ডোজটি নেওয়ার পরও কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে, তাদের প্রায় কারোরই তেমন কোনো বড় সমস্যা দেখা দেয়নি। কোভিডের টিকার প্রথম ডোজটি নেওয়ার পর কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মাত্র একজন মানুষের। এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে কোভিডের টিকার প্রথম ডোজ নেওয়া ২০০ জন বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর। কাজেই সামনের দিনগুলো যে অতোটা ধোয়াশার নয়, এটি মোটামুটি নিশ্চিত।

কাজেই আসুন লকডাউনের এই সময়টা আমরা উপভোগ করি। আমার নতুন রুটিনে প্রতি রাতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নেটফ্লিক্সে একটা নতুন ছবি দেখা মোটামুটি রুটিন হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। সেদিন আমার সাথে একটা টকশোতে সংযুক্ত একজন বলছিলেন তার লকডাউনের সময়গুলো কাটছে পরিবারের সদস্যদের সাথে লুডু আর কেরাম খেলে। করা তো যায় এমনি কতোকিছুই হঠাৎ পাওয়া অল্পদিনের এই ছুটিটাকে নিজেদের মত করে উপভোগ করায়। আসুন জীবনটাকে আবারও উপভোগ করার প্রস্তুতি নেই আর আপাতত উপভোগ করি লকডাউনটাকে। হ্যাপি লকডাউন!

লেখক : চেয়ারম্যান, লিভার বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। সদস্য সচিব, সম্প্রীতি বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়