শিরোনাম

প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:২০ রাত
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বোয়ালমারীতে লকডাউনে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষেরা

সনত চক্র বর্ত্তী: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে নেয়া হয়েছে লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ। এই করনা দুর্যোগ মোকাবেলায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা ।

চলমান লকডাউনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বোয়ালমারীতে নিম্নবৃত্ত এবং অতি দরিদ্র সীমার আয়ের মানুষগুলো।

গতবছর সরকারি বা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান , আবার নিজের উদ্যোগে নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষেরা সরকারি-বেসরকারি কিছু সাহায্য-সহযোগিতা করলেও এবার লকডাউনে কোন সাহায্য বা সহযোগিতা তাদের ভাগ্যে জুটছে না, তাই এই সব নিম্ন আয়ের মানুষ মানবতার জীবন যাপন করছে তারই একটি বড় অংশই ।

দৈনন্দিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার নেই। ফলে একদিকে খাবার কিনতেও হিমশিম খাচ্ছে, অপরদিকে সামাজিক মর্যাদার কারণে কারও কাছে সাহায্য চাইতেও পারছেন না। নিরবেই কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে সরকার ঘোষিত সাত দিনের লকডাউন পার করে আবার সাত দিনের শুরু হয়েছে। লকডাউনকে ঘিরে কয়েকদিনের ব্যবধানে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্যেরও উর্দ্ধগতি লক্ষ্য করা গেছে।

বোয়ালমারী উপজেলায় বড় একটি অংশ নিম্ন আয়ের মানুষ । তারা ক্ষুদ্র বা মাঝারি ধরনের ব্যবসা করে আবার জন বিক্রি করে সংসার চালান।

এর বাইরে তাদের আয়ের কোন পথ নেই। লকডাউনে নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসা ছাড়া বাকি ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। দোকান পাট খোলার উপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মোট কথা তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে গত কয়েকদিন ধরে।

উপজেলা বোয়ালমারী বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী অসীম বলেন, এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে খাচ্ছি। যদিও এনজিও লোন বন্ধ তারপরও খুললেই তো কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
চলমান লকডাউনে গত কয়েকদিন ধরে দোকান পাট বন্ধ রয়ে আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এঅবস্থায় দোকান ভাড়া ও সংসার চালাতে কোনো উপায়ন্তর না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠিন অনিশ্চয়তায় পড়ে এখন আমরা চোঁখেমুখে অন্ধকার দেখছি। কীভাবে দোকান ভাড়া দেব, কীভাবে সংসার চালাব, সেই চিন্তায় ঘুম আসে না আমাদের। অপরদিকে এমন কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারছিনা আমরা।

তিনি আরো জানান, গত বছরও প্রায় একইদিনে লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রয়ে ব্যবসার অনেক লোকশান হয়েছে। এবছর ভেবেছিলাম ব্যবসা করে কিছুটা হলেও লোকশান পুশিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু এবছরও রমজানে লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে কিভাবে যে আমাদের সংসার চলবে তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানে।

এদিকে, মঙ্গলবার (২০এপ্রিল) বোয়ালমারী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মালের বাজারেও ওস্তা, ঢেড়ঁস শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পন্যের দামও লকডাউনকে ঘিরে অনেকটা বেড়ে গেছে।

একইদিন বাজারের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে দেখা গেছে, কিছু ব্যবসায়ীরা পেটের দায়ে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের পন্য বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে।

উপজেলার ঠাকুরপুর বাজারে গিয়ে কথা দুধ বিক্রিতার সাথে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাই বড় বিপদে আছি। সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। চক্ষুলজ্জায় কষ্টগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। ওই যে আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ । কোন দিন না খেয়েও দিন পার করছি।

তিনি খুব আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আছে শুধু সুখ। কিন্তু এর আড়ালে আমরা যে কত কষ্টে জীবনযাপন করি, তা বোঝানো যায় না। কেউ বোঝারও চেষ্টা করে না।

এমনভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনগুলোতে ঘরে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, মা, বাবা, ভাই,বোন নিয়ে কিভাবে যে সংসার চলবে ভাবলেই দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়