হারুন-অর-রশীদ: [২] সারা দেশের ন্যায় ফরিদপুরেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করণের নিমিত্তে পুলিশ বাহিনীর টহল শুরু হয়েছে। সরকারী নির্দেশে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ জেলাটি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন বাজার এলাকায় টহল ও অভিযানে নেমেছে পুলিশ। এসময় আতঙ্কে অপ্রয়োজনে রাস্তায় থাকা মানুষ এলাকা ছাড়লে জনশুণ্য হয়ে পড়ছে রাস্তা ঘাট। বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে এসময় অনুমোদিত ঔষধ ও খাদ্য দ্রবসহ অনন্যা দোকান খোলা রয়েছে।
[৩] জেলা সদরের রেল স্টেশনের পাঁশে বস্ততিতে বসবাস করে আসছেন নিম্ন আয়ের দিনমুুুজুর,ভূমিহীন ও বেশ কিছু অসহায় পরিবার। তাদের জীবন চলে দিন আয় দিন খেয়ে। কিন্তু বর্তমান এই দুর্যোগে তারা যেন আরো অসহায় হয়ে পড়েছে।
[৪] ভূমিহীন এক ক্ষুদ্র ফুটপাত ব্যবসায়ী কুদ্দুস মিয়া জানালেন, আজ কয়দিন হয়েছে রাস্তায় বসতে পারছেন না। তার ফুটপাতের খাবারের দোকানটি প্রশাসন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। তাই সে আর বিক্রি করতে পারছেনা। অথচ তার সামান্য এই দোকানের ক্ষুদ্র আয়ে চলে তার পরিবারে বৃদ্ধা মাসহ তার ৪-৫ জনের সংসার।
[৫] তিনি জানালেন, একদম বেকার হয়ে গেছি আর দুদিন এভাবে চলতে থাকলে পেটে ভাত জুটবেনা। না খেয়ে মরতে হবে।
[৬] এদিকে আর এক অসহায় মালেকা খাতুন নামের এক মহিলা জানালেন, আমি খাবারের হোটেলসহ ডেকোরেটরে কাজ কাম করে খাই কিন্তু এখন কাজকাম সব বন্ধ কি করে যে চলবো ভেবে পাচ্ছি না। আমার ছেলেটাও বেকার হয়ে গেছে সে কিছু ঋণদিনা আছে, সামনে দিন কিভাবে কাটবে ভেবে সারারাত ঘুমাতে পারছি না।
[৭] রিক্সা চালক লিটন মোল্যা বলেন, আমার চারটা বাচ্চা। সাথে ঘর ভাড়া। আমি রিক্সা না চালাতে পাড়লে না খেয়ে থাকে পরিবার।পেটের দায়ে ভয়ে ভয়ে তবুও রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি।
[৮] আটো চালক কামাল মাতুব্বর জানান, লকডাউনের কারণে গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছিনা। পোলাপাইনদের নিয়ে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, সরকারের পাঁশাপাশি সমাজের জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসতো তবে কিছুটা হলেও দুর্ভোগ লাঘব হতো।
[৯] জেলা প্রশাসন বলছে, লকডাউনে অসহায় ও দিনমজুরদের জন্য সরকারের দেওয়া ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।