দিপু তৌহিদুল: ২০০০ সালের আগ দিয়ে ও কিছুটা পরেও সরকারি আমলারা অফিসের গাড়ি পাশাপাশি বাস, ট্যাক্সি, রিক্সার ওপর নির্ভর করতেন। খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা যাদের নেই তারা এটা ঠিক বুঝে উঠবে না। এরপর বাংলাদেশে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি আমলারা প্লট, ফ্ল্যাট, আর গাড়িতে ভেসে যেতে লাগলো পাশাপাশি তাদের কর্ম দক্ষতা শিকেয় উঠে গেলো। আমলার লাইফ স্টাইল লাফিয়ে লাফিয়ে এলিট পর্যায়ে উন্নিত হয়ে গেলো। ফলাফল হিসেবে সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে আমলার বিশাল এক গ্যাপ তৈরি হয়ে গেলো কিংবা গ্যাপটা বানিয়ে দেওয়া হলো। এই যে দেশে করোনার নিত্যনতুন কানুন দেখেন তা মূলত আমলারাই তৈরি করে ক্ষমতায় আসীন মন্ত্রীদের হাতে দিয়ে দেয়। আইন কানুনের আড়াল মানুষ আমলারা কিন্তু জনবিরোধী আইন অসন্তুষ্ট নাগরিকের গালিটা বরাদ্দ হয় রাজনৈতিক মন্ত্রী এবং রাজনৈতিক দলের ওপর। এই যে লকডাউন নিয়ে এতো কথা হচ্ছে তার মূলে আমলারাই, তারা দামি গাড়ি চড়ে আর নিজেরা ভালো থেকে নিজেদের মন মর্জি মাফিক সকাল সন্ধ্যা করোনার আইন বানাচ্ছে-বদলাচ্ছে। কীসে নাগরিকের ভালো সেটা আমলার মুখ্য কিছু না, তার লক্ষ্য শুধু নিজের ভালোটা।
এই সংস্কৃতি রাজ রাজাদের আমলেও ছিলো, রাজ কর্মচারীদের অন্যায় আচরণ নিয়ে স্টাডি করলে বুঝতে পারবেন। রাজনীতি, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল সব কিছুরে এক গ্লাসে গুলিয়ে মিশ্র শরবত বানিয়ে ফেলাটাই রাজনৈতিক দলের চরম ভুল। রাজনৈতিক দল যখন নিজেদের আমলাদের হাতে ছেড়ে দেয়, তখনই মন্দ অবস্থার সৃষ্টি হয়। আমলারা আড়ালে থেকে যায়, তাদের কোনো মূল্য দিতে হয় না। যতো মূল্য হয় তা চুকায় রাজনৈতিক নেতা আর তাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। আবার এটাও সত্যি দলবাজি মত্তরা দক্ষ আমলারে কর্ম ক্ষেত্র হতে সরিয়ে রাখার জন্য ওএসডি নামের অস্ত্র ব্যাবহার করে। এতে করে রাষ্ট্র ভালো সিদ্ধান্ত ও কাজ থেকে বঞ্চিত হয়। মানুষের জীবনের মতো ক্ষমতাও অমর কিছু নয়, এটা বুঝে রাজনৈতিক দলগুলো আমলা জিম্মি না হলে দেশের জন্য মঙ্গল। দলবাজি যারা করে তারা এসব বুঝবেন না, কারণ দলবাজ মানুষের ভেতর দেশপ্রেমের কোনো জায়গা নেই। ফেসবুক থেকে