অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: বিয়ে কেন? কখন থেকে মানুষের বিয়ে সিস্টেমটি চালু আছে? সকল জীবের মাঝে যৌনতা কোনো না কোন ফর্মে বিদ্যমান। অনেক প্রাণিকূলে যৌনতা নিয়েই সব চেয়ে বেশি মারামারি, হানাহানি হয়। মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী তাই এই মারামারি থেকে রক্ষার জন্য বিয়ে নামক একটি বিধান সৃষ্টি করেছে। এর মাধ্যমে সমাজে এনট্রপি কমানো হয়েছে। বিয়ে কেবল যৌনতার জন্যই নয়। এর অন্য আরো অনেক সুফল আছে যেমন এর মাধ্যমে সামাজিক মেলবন্ধন হয়, সম্পত্তি হস্তান্তর সহজ হয়, সন্তান লালন পালন সহজ হয়। এই সিস্টেমটি কোনো না কোন ফর্মে আদি কাল থেকেই চলে আসছে যদিও নির্দিষ্ট সময় কাল তেমন জানা নেই। বিয়ে নানা রকম হতে পারে।
যেমন [১] endogamy এইটা এমন একটা কাস্টম বা ট্রেডিশন যেখানে কেবল একটি নির্দিষ্ট কমিউনিটির মধ্যেই বিয়ে বোঝায়।
[২] exogamy এইটা এমন একটা কাস্টম বা ট্রেডিশন যেখানে কমিউনিটির বাহিরে বিয়ে বুঝায়।
[৩]cousin marriage যেইটা হলো মামাতো ভাই-বোন, চাচাতো ভাই-বোন, খালাতো ভাই-বোনদের মাঝে বিয়ে বুঝায়। বিশ্বে ২৬টি দেশে এইরকম বিয়ের প্রচলন আছে।
[৪]Polyandry এই বিয়ে মানে হলো একজন নারী একই সঙ্গে একাধিক স্বামী রাখতে পারে। ভারত, চীন, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আমেরিকার কিছু কিছছু ট্রাইবের মধ্যে এমন বিয়ের প্রচলন দেখা যায়।
[৫] পলিগ্যামি এইটা বিয়ে বলা যায় না বরং প্রাকটিস বলা যায় যেখানে একই সঙ্গে একাধিক spous থাকতে পারে।
[৬]Polygyny মানে হলো একজন পুরুষের একই সঙ্গে একাধিক স্ত্রী থাকতে পারে।
[৭]Same-sex Marriage: Partners of the same sex who are married. এই [৭] নম্বরটা নতুন। ইদানিং কিছু কিছু দেশ এর প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে এবং সময় যতো যাচ্ছে এর সংখ্যাও বাড়ছে। যদিও এটির সঙ্গে অনেক ধর্মের বিরোধ আছে। আরো একটা আছে। সেটাকে বলে ‘লিভ টুগেদার’। এটা কোনো কাগুজে চুক্তি নয়। এটা কেবলই একটা বিশ্বাসের চুক্তি। এটাও পশ্চিমা দেশে এখন বেশ প্রচলিত। বিয়ে করতে অনেক খরচ সেটা বাঁচাতেও অনেকে লিভ টুগেদার করে।
তবে এটা করতে একটু উন্নত মানসিকতার মানুষ লাগে। বিশেষ করে সততার দিক থেকে খুবই শক্ত হতে হয়। আমার পিএইচডি সুপারভাইজরসহ আমার পরিচিত অনেকেই আছে যারা লিভ টুগেদার করে এবং খুব সুন্দর জীবন যাপন করছে। এই সম্পর্কে দুজনকেই সর্বদা পায়ের ওপর থাকতে হয় ঠিক বিয়ের আগে প্রেমের সম্পর্কের সময় যেমন উভয়েই সর্বদা তার পার্টনারকে খুশি করতে চেষ্টা করে তেমন। তবে মানবিক বিয়ে নামে কিছু আছে এইরকম কখনো শুনিনি। কোন কোন ধর্ম বিয়েকে ঐশী বা ফরারহব হিসাবে দেখানো হয় যদিও এই দাবির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই কিন্তু বিশ্বাসের ভিত্তি বেশ মজবুত। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়