শিরোনাম
◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে  প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন  ◈ পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফে'র গুলিতে বাংলাদেশি নিহত ◈  কমবে তাপমাত্রা, মে মাসেই কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন বা রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয়: মার্কিন কর্মকর্তা

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২১, ০৪:৫৫ সকাল
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০২১, ০৪:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আহসান হাবিব: দাস সমাজে সংস্কৃতির রূপ ছিল একরকম, সামন্ত সমাজে এসে তা বদলে গেছে

আহসান হাবিব: সংস্কৃতি নিয়ে অনেককে হাহাকার করতে দেখি। তাদের বলবার কথা একটাই- আমাদের সংস্কৃতি যা ছিল সব রসাতলে গেলো, বিদেশি সংস্কৃতি এসে আমাদের সবকিছু দখল করে নিলো। এই হাহাকার তুলে তারা বর্ণনা করতে বসেন, আমাদের সংস্কৃতি কেমন ছিল এবং কতো সুন্দর ছিল, বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবে এখন কতো বাজে হয়ে পড়েছে, এসব। প্রকৃতপ্রস্তাবে এসব লোকদের সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তারা বোঝেন নিজেদের ভালো এবং মন্দের ধারণা দিয়ে।

যা তাদের মতের সঙ্গে মেলে না, তাই মন্দ সংস্কৃতি। কিন্তু সংস্কৃতি কারও ব্যক্তিগত ভালো কিংবা মন্দের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে না। এটা ব্যক্তি কিংবা সমাজের ইচ্ছা নিরপেক্ষভাবে গড়ে ওঠে। একটা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের কোটি কোটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে হাজারো সম্পর্কে জড়িত। এই সম্পর্কের মূলে রয়েছে উৎপাদন ব্যবস্থার প্রকৃতি। সবাই বাধ্য এই সম্পর্কে জড়িত হতে। উৎপাদন ব্যবস্থা যদি এখানে রাজা হয়, মানুষ তার দাস। দাস সমাজে সংস্কৃতির রূপ ছিল একরকম, সামন্ত সমাজে এসে তা বদলে গেছে। কেউ যদি বলে দাস সমাজের সংস্কৃতিই ছিল সেরা, সামন্ত সংস্কৃতি সব শেষ করে দিলো, তাহলে বলতে হবে তার ভাবনা পশ্চাৎমুখী এবং বর্জনীয়। সমাজ এগিয়ে চলে, উৎপাদন ব্যবস্থার চরিত্র বদলে যেতে থাকে মানুষের আকাক্সক্ষাও বদলে যেতে থাকে। এই বদল ঘটে দুইভাবে, স্বতঃস্ফূর্ত এবং সংগ্রাম দ্বারা।

একটি বিদ্যমান সমাজের ভেতর যে উৎপাদন ব্যবস্থা চলতে থাকে তার ভেতরেই জন্ম নেয় অগ্রগামী উৎপাদন ব্যবস্থার বীজ। নেবেই, এর কোনো ব্যতিক্রম হতে পারে না। এক সময় সংঘাত বাঁধে, লড়াই হয়, অগ্রগামী অর্থনীতি জিতে যায়। ধীরে ধীরে সমগ্র সমাজ সেই ব্যবস্থার অধীন হয়ে পড়ে।  এই ব্যবস্থা বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সংস্কৃতিও বদলে যায়। অর্থাৎ সংস্কৃতি আর কিছুই নয় একটি নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষের সম্পর্কের রূপ। এখন আমরা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অধীন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি এই ব্যবস্থার প্রধান চালিকা শক্তি। পণ্য উৎপাদন এবং বাজার এর প্রাণ ভোমরা। সে পৃথিবীর সবকিছুকে পণ্য বানাতে চায়। তাই এর হাত থেকে প্রকৃতির কিছুই রক্ষা পায় না। বন, নদী, পাহাড় সবকিছুকে সে গ্রাস করতে চায়। এই চাওয়া শুধু যে ব্যক্তির ইচ্ছাধীন নয়, তাই নয়, এটা ব্যবস্থার দুর্দমনীয় বৈশিষ্ট্য। রাজনৈতিক আদর্শ কেবল এর গতিকে সীমাবদ্ধ করতে পারে। আকাশ সংস্কৃতি পণ্য সংস্কৃতির একটি বৈশ্বিক রূপ ।

এখন পৃথিবী একটি বাটনের চাপে উদ্ভাসিত। পৃথিবীর কে কোথায় কি করছে, সব দেখা যায়। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি এখন এক ঘাটে জল খাচ্ছে। এর অর্থ এই যে সারা পৃথিবীর অর্থনীতি একটি মাত্র রূপে এসে মিলছে এবং গতিপ্রাপ্ত হয়ে উঠছে। সংস্কৃতিও তার ছাঁচে গড়ে উঠছে। এই ছাঁচ আগের চেয়ে আলাদা, সম্পূর্ণ আলাদা। এই আলাদা রূপটাকে কেউ সহসা মেনে নিতে পারে না, তখন হাহাকার করে বলে ওঠে ‘আমাদের সব গেলো’! আসলে কিছুই যায়নি, সব আছে, শুধু এর রূপান্তর ঘটেছে। একটি সমাজ তার উদ্ভাবন নিয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না। প্রতিনিয়ত বদলে বদলে যায়। সংস্কৃতিও তার পরিবর্তিত রূপ নিয়ে হাজির হয়। আমরা তার মধ্যেই বাস করতে থাকি। আমরাও বদলে যাই...। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়