শিরোনাম
◈ রোডম্যাপ অপরিপক্ব ও আংশিক, জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি: জামায়াত ◈ প্রশাসনে বড় পদোন্নতি, উপসচিব হলেন ২৬৮ কর্মকর্তা ◈ বিরলে জীবন মহল পার্কে অনৈতিক ঘটনার জেরে সংঘর্ষ ◈ টাঙ্গাইলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার ◈ চক‌রিয়ায় সড়ক দুঘর্টনায় বাঁশখালীর যুবলীগ নেতা মনসুর আলম নিহত ,আহত ৫ ◈ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ‘উই আর হ্যাপি’: মির্জা ফখরুল ◈ শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া ◈ সৌদি গ্রিন কার্ড: নির্দিষ্ট অর্থে আজীবন বসবাস, কাজ ও ব্যবসার সুযোগ বিদেশি বিনিয়োগকারী ও পেশাজীবীদের জন্য ◈ চব্বিশের আন্দোলনকারীদের ব্যবহারে দেশবাসী অতিষ্ঠ: কাদের সিদ্দিকী ◈ ডাকসু নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা

প্রকাশিত : ২৪ মার্চ, ২০২১, ১২:৪২ দুপুর
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২১, ১২:৪২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের রাগবিতে গর্বের নাম আজমিরা আক্তার, স্বপ্ন দেখেন নতুন কিছুর

রাহুল রাজ: রাগবি প্রমীলা খেলোয়াড়, প্রমীলা দলের কোচ, ম্যাচ অফিসিয়াল ও রেফারি আজমিরা আক্তার মাত্র ২১ বছর বয়সে এক অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। তিনি এশিয়া রাগবির আনস্টপবেল উইমেন্স ক্যাম্পেইনে ৩২ নারীদের মধ্য নির্বাচিত হয়েছেন।

রাগবিতে সেরা ৩২-এ বাংলাদেশের আজমিরা বাংলাদেশের প্রথম নারী রাগবি রেফারি তিনি। ২০১৬ সাল থেকে দুই বছর খেলেছেন জাতীয় দলে। এরপর এশিয়ান রাগবির লেভেল ওয়ান কোচেস কোর্স করেন ঢাকায়। ভারতের ওড়িশায় গিয়ে করেছেন রেফারিং কোর্স। বাংলাদেশের রাগবিতে এ রকম নানামুখী কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় এশিয়া রাগবি তাদের ‘আনস্টপেবল ওমেন্স ক্যাম্পেইনের’ সেরা ৩২ জনের তালিকায় বেছে নিয়েছে বাংলাদেশের ২১ বছর বয়সী আজমিরাকে। দেশের অপ্রচলিত খেলা রাগবির জন্য এটি বিরল এক সম্মান। বাংলাদেশে মেয়েদের রাগবির উন্নতির দুয়ার খুলে যাওয়ারও একটা সম্ভাবনা দেখাচ্ছে এই স্বীকৃতি।

‘আনস্টপেবল ওমেন্স ক্যাম্পেইন’ মূলত মেয়েদের রাগবিতে আগ্রহী করে তোলার জন্য বিশ্ব রাগবিরই একটা কার্যক্রম। ২০১৯ সালে ‘ট্রাই অ্যান্ড স্টপ আস’ ক্যাম্পেইন দিয়ে এ যাত্রার শুরু। গত বছর থেকে এশিয়া রাগবিও শুরু করেছে এই কার্যক্রম।

আফগানিস্তান, কম্বোডিয়া, চীন, বাংলাদেশ, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ এশিয়ার সব দেশ থেকে ৮৪ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করে এশিয়া রাগবি। সেখান থেকে শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে সেরা ৩২ জনকে। তবে চূড়ান্ত বাছাই করবে বিশ্ব রাগবি। সব মহাদেশের সেরা ১৫ জনকে বেছে নেবে বিশ্ব রাগবির সর্বোচ্চ সংস্থা। তাদের দেওয়া হবে বিশেষ পুরস্কার।

এই ৩২ জনকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা আছে এশিয়া রাগবিরও। বাংলাদেশের মতো পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে পরবর্তী সময়ে অংশ নেবেন এই খেলোয়াড়েরা। আজমিরার সেরা ৩২-এ থাকার ইতিবাচক দিক দেখছেন বাংলাদেশ রাগবি ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, এশিয়ান রাগবির মেয়েদের উপদেষ্টা কমিটিতে থাকে ১৫ জন মেয়ে। ভবিষ্যতে সেখানে ঢোকার একটা সুযোগ থাকবে ওর।

স্কুল-কলেজে হ্যান্ডবল খেলতেন আজমিরা। ২০১৬ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে প্রথমবার অংশ নেন রাগবি খেলায়। সেই থেকেই খেলাটার প্রতি টান। একপর্যায়ে খেলা ছেড়ে ঝুঁকে পড়েন কোচিং ও রেফারিংয়ের দিকে।

তিন বোনের মধ্যে আজমিরা মেজ। অন্যরা খেলাধুলায় নেই। ১২ বছর বয়সে হারান মা লাকি বেগমকে। এরপর বাবা মোজাম্মেল হকই তিন মেয়েকে মায়ের আদর আর বাবার স্নেহে বড় করছিলেন। কিন্তু সবজি ব্যবসায়ী বাবাও মারা যান ২০১৬ সালে। তখন রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েন আজমিরা ও তাঁর বোনেরা। অন্য দুই বোন এখন আছে মুন্সিগঞ্জে নানির কাছে। আর খেলাধুলার জন্য পেয়িং গেস্ট হিসেবে আজমিরা থাকেন কেরানীগঞ্জের এক বাড়িতে। সেখান থেকে নদী পার হয়ে আসেন পল্টন আউটার মাঠে। ট্রাউজার, ট্র্যাকসুট পরে মাঠে যান বলে অনেক কটু কথাও শুনতে হয় তাঁকে। দুঃখ করে বলছিলেন, ‘খেয়াঘাটে যাঁরা টাকা তোলেন, প্রায় সময়ই বলে এই পোশাক পরে কোথায় যাচ্ছ? শুনেও এড়িয়ে যাই। অনেকে বলেন, মেয়েদের রাগবি খেলে কী হবে?’

খেলে আসলেই উপার্জন হতো না তেমন। এখন বিভিন্ন টুর্নামেন্টে রেফারির দায়িত্ব পালন করেন। সেখানেও সম্মানী নামেমাত্র, আজমিরা জানান, আমাদের শুধু যাতায়াতের ভাড়াটাই দেওয়া হয়।

এত কিছুর পরও রাগবিকেই আঁকড়ে আছেন আজমিরা। স্বপ্ন দেখেন বিশ্ব রাগবির বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলবে বাংলাদেশের মেয়েরা, খেলা শুরুর পর অনেক উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি। খেলার নিয়মকানুন শিখেছি, কোচিং কোর্স করেছি। এখন একটাই স্বপ্ন, বাংলাদেশের মেয়েদের কাছে এগুলো ছড়িয়ে দেওয়া। ওদের রাগবিতে আগ্রহী করে তোলা। আমাকে দেখে যেন আরও ১০ জন মেয়ে রাগবিতে আসে, এটাই একমাত্র চাওয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়