এম এ কুদ্দুস, বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বিরলে জীবন মহল পার্কে অনৈতিক ঘটনার প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকেলে তৌহিদী জনতা ও পার্কের স্বত্বাধিকারী ড. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জীবনের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের বহুজন আহত হয়েছেন। এসময় পার্কের ভেতরে থাকা কথিত জীবনিয়া দরবার শরীফে অগ্নিসংযোগ ও বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে জীবন মহল পার্কের মূল ফটকের সামনে জীবন চৌধুরীর সমর্থকরা সেবক পার্টির ব্যানারে প্রতিবাদ সভা করছিলেন। একই সময়ে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তৌহিদী জনতা ড. জীবন চৌধুরীর গ্রেফতার ও রিসোর্ট ও দরবার শরীফ বন্ধের দাবিতে বিরল হয়ে কাঞ্চন মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে কয়েকটি পিকআপ ভ্যান পার্কের সামনে পৌঁছালে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের মাধ্যমে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষ চলাকালে ড. জীবন চৌধুরী পালিয়ে গেলেও বিক্ষুব্ধ জনতা পার্কে প্রবেশ করে কথিত দরবার শরীফে আগুন দেয় এবং ভাঙচুর চালায়। পরে সেনাবাহিনী, যৌথ বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পর দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক জানান, পার্কে অনৈতিক কার্যক্রমের অভিযোগ আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। সেগুলো বন্ধে প্রশাসন উদ্যোগ নিচ্ছিল। সংঘর্ষের আশঙ্কায় সকাল থেকেই প্রশাসনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিলেন।
পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন বলেন, সম্প্রতি এখানে অনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত নারী-পুরুষকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা প্রদান করে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার তৌহিদী জনতা প্রতিবাদে নেমেছিল। জীবন চৌধুরীর সমর্থকদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট জীবন মহল পার্কের হোয়াইট হাউস রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার দায়ে সাতজনকে সাজা ও জরিমানা করা হয়। এর পর থেকেই পার্কের মালিক ড. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জীবনের গ্রেফতার ও রিসোর্ট-দরবার শরীফ বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে নামে স্থানীয় তৌহিদী জনতা।