আমিনুল জুয়েল:[২] ফালগুনের শাশ্বত রুপ প্রকৃতিকে নতুন করে সাজিয়ে দিয়েছে। সজনের শ্বেতশুভ্র ফুলের মাঝে কোকিলের গলা ছেড়ে গান নতুন মাত্রা যোগ করেছে ঋতুরাজ বসন্তে। শীতের বিদায়ী বার্তা আর বসন্তের আগমনী জানান দেয় কোকিলের কুহুতান। সবুজ সজনে গাছে নতুন কচি পাতার ফাঁকে ফাঁকে ধপধপে সাদা ফুলের রাজ্য। দেখে মনে হবে, প্রকৃতির এই অপরুপ সৌন্দর্যে হারিয়ে যাই বার বার।
[৩] বাড়তি খরচ ও ঝামেলা না থাকায় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় বাড়ছে সজনে চাষের প্রবণতা। বিনা খরচ আর পরিশ্রমের ফসলটি বাজারে চড়া দামেই বিক্রি হয়। এতে বাড়তি অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা রয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি সজনে ডাটা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একটি মাঝারি বা বড় ধরণের গাছ থেকে চার থেকে ছয় মণ ডাটা পাওয়া যায়। তাই বিনাশ্রমে, অল্প জায়গায় সজনের আবাদ করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এবছর আবহাওয়া ভাল থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
[৪] গ্রামাঞ্চলের মেঠো পথে, বাড়ির আঙ্গিনা, উঁচু ভিটায়, কৃষি জমির ধারে, বাড়ির পাশে, পুকুর পাড়ে ও ফাঁকা পরিত্যক্ত জায়গায় সজনে গাছের ভাঙা বা কাটা ডাল রোপণ (পুঁতে) করা যায়। এতে তেমন কোন যত্ন ছাড়াই সজনে গাছ বড় হয়। নানা গুণে সমৃদ্ধ এই সজনে ডাটা। রয়েছে হাজারও পুষ্টিগুণ। পুষ্টি ও ঔষধি গুণসমৃদ্ধ সবজি সজনের ফুল, পাতা ও ডাঁটা সবটাই খাওয়া যায়।
[৫] চিকিৎসকদের মতে, এই সবজিতে ক্যালসিয়াম, খনিজ লবণ আয়রণসহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। শরীরে পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসুতি মহিলাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে সজনে ঔষধি সবজি হিসেবেও চাহিদা রয়েছে।
[৬] এছাড়া গাছের বাকল (ছাল) ও পাতা রক্ত আমাশায় পেটের পীড়া, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। জলবসন্ত, ডায়রিয়া, লিভারজনিত রোগ প্রতিরোধ করে সজনে। এছাড়াও, ডাঁটা দেহের ক্যানসার রোধ করে, রাতকানা দূর করে, দুর্বল হাড় শক্ত করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে রক্তচাপ কমায়। সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন