নিজস্ব প্রতিবেদক : [২] বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে ফেডারেশন থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি ছুটি নিয়ে জাতীয় তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় কামরুল ইসলাম ক্রিড়া পরিষদের ক্যাম্প থেকে বের হন। কিন্তু বাড়িতে না গিয়ে, গোপনে রাজধানীর বসিলায় নারী সহকর্মী ও তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় প্রতিভা সরকারের বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই মারা যান কামরুল। বাড়ি যাওয়া কথা বলে গোপনে সহকর্মীর বাসায় অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে মৃতের পরিবার, ফেডারেশন ও পুলিশের মনে সন্দেহ ঘনিভ‚ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ওই নারীকে।
[৩] তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, শুক্রবার ভোরে আমাদের প্রশিক্ষক প্রতিভা সরকার আমাকে ফোন করে জানায়, তার বাসায় কামরুল মারা গেছে। আমি হতভম্ব হয়ে যাই। দ্রুত স্টাফদের ঘটনাস্থলে যেতে বলি। আমরাও সবাই সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যাই। পাশাপাশি চট্টগ্রামে কামরুলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তার ভাইকে প্লেনে করে ঢাকায় নিয়ে আসি। এরপর কামরুলের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।
[৪] তিনি বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি কামরুল আমাদের কাছ থেকে বাড়ি যাবার কথা বলে ছুটি নেয়। সকালেই সে ক্রিড়া পরিষদের ক্যাম্পে থেকে চলে যায়। কিন্তু সে যে বাড়ি যায়নি, তা আমরা কেউ জানতাম না। প্রভাতীর বাসায় ছিল ও। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।
[৫] মাহমুদুল হাসান বলেন, কামরুল আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। আমাদের কাছে তার মৃত্যু স্বাভাবিক লাগেনি। প্রভাতীর সঙ্গেও তার বোঝাপড়া ছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কামরুল ১৩-১৪ বছর ধরে আমাদের সঙ্গে ছিলেন। বলা যায় ছোটবেলা থেকেই আছে। খুব ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণজয়ী। বাংলাদেশ আনসার থেকে নিয়মিত ভাতাও পেতেন।
[৬] শুক্রবার ভোরে তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষক প্রতিভা সরকার তার বসিলার বাসা থেকে কামরুলকে অচেতন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। ওই সময় সঙ্গে তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের আরও দুজন ছিলেন। যাদের খবর দিয়েছিল প্রতিভা নিজেই।
পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগে প্রতিভা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তার বসিলার বাসায় যান কামরুল ইসলাম। রাতের খাবার খেয়ে কামরুল অন্য একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর ভোররাতে কোনও একসময় দরজার ফাঁক দিয়ে প্রতিভা দেখতে পান কামরুল সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। এরপর তিনি নিজেই বটি দিয়ে গলার ফাঁস কেটে দেন। পরে তিনি ফেডারেশনের কয়েকজনকে জানান। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
[৭] হাজারীবাগ থানার ওসি সাজেদুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে কামরুল ও প্রতিভার মধ্যে ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। তবে সম্প্রতি তা কোন পর্যায়ে ছিল, তা তদন্ত করা হচ্চে।
[৮] কামরুলের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর দক্ষিণ শিকলবাহা এলাকায়। তার বাবা আবদুল করিম কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। বড় ভাই আহমদ আল মামুন বলেন, আমরা ফেডারেশনের সহযোগিতায় মরদেহ বাড়িতে আনার পর শনিবার রাতে দাফন করা হয়েছে। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে সত্য বের করুক।
[৯] তিনি আরও বলেন, আমরা জানতাম কামরুল ঢাকায় ক্যাম্পে রয়েছে। প্রতিভার কাছে ছিল কেন তা জানি না। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :