পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার বয়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলা প্রতিহত করার সময় পাকিস্তানের ৪ সেনা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা বাহিনীর একটি ক্যাম্পে প্রবেশের আগেই প্রতিহত করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার ভারতীয় মদদপুষ্ট খারেজি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা বয়া এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পে নৃশংস ও কাপুরুষোচিত হামলার চেষ্টা করে।’ পাকিস্তান রাষ্ট্র ‘ফিতনা আল খারেজি’ নামটি নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সশস্ত্র গোষ্ঠীর জন্য ব্যবহার করে।
আইএসপিআর জানায়, সন্ত্রাসীরা প্রথমে ক্যাম্পের বাইরের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা করলেও দ্রুত ও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার ফলে তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। পরে সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরকবোঝাই একটি গাড়ি ক্যাম্পের বাইরের দেয়ালে আঘাত করে। এতে দেয়ালের বড় অংশ ধসে পড়ে এবং আশপাশের বেসামরিক স্থাপনা, বিশেষ করে একটি মসজিদ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বোমা হামলায় আশপাশের বাড়িঘর ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ১৫ জন বেসামরিক মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এছাড়া তীব্র গুলিবিনিময়ের ঘটনাও ঘটে দু’পক্ষের মধ্যে। এতে ৪ সেনা সদস্য নিহত হন।
আইএসপিআর জানায়, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- হাবিলদার মোহাম্মদ ওয়াকাস (৪২, জেলা কোটলি), নায়েক খানওয়াইজ (৩৮, জেলা মানসেহরা), সিপাহি সুফিয়ান হায়দার (২৫, জেলা ভেহারি) ও সিপাহি রিফাত (৩২, জেলা লেইয়াহ)।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী আরও জানায়, আফগানিস্তানভিত্তিক খারেজিরা এ হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেছে, যা আফগান তালেবান সরকারের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা দাবি করে নিজেদের ভূখণ্ডে এমন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উপস্থিতি নেই। বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান আশা করে আফগান তালেবান সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নিজেদের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না।
ওয়াজিরিস্তানে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। দুই মাস আগে মির আলিতে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং চার সন্ত্রাসী নিহত হয়। চলতি বছরে গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স ২০২৫-এ পাকিস্তান বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সন্ত্রাসপ্রবণ দেশের তালিকায় উঠে আসে, যেখানে আগের বছরের তুলনায় দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়েছে ৪৫ শতাংশ।
সূত্র: ডন