ডা. আরমান রহমান: এক বিলিয়ন অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাক্সিন নিম্নআয়ের দেশকে দেয়ার জন্যে কোভ্যাক্স উদ্যোগ ইন্ডিয়ার সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। কিন্তু গতকাল (৩ জানুয়ারি) ভারত সরকার জানিয়ে দিয়েছে তারা ভ্যাক্সিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে, এই ভ্যাক্সিন তারা এখন আগে নিজেদের দেশে ব্যবহার করবে, এর পরে চুক্তি মোতাবেক অন্যান্য দেশে পাঠাবে।
এই রপ্তানি চুক্তিটি হয়েছিল কোভ্যাক্সের সাথে, কোভ্যাক্স হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ যেটা সমন্বয় করছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন, গাভি (GAVI, ভ্যাক্সিন এলায়েন্স) এবং সিপি (The Coalition for Epidemic Preparedness Innovations (CEPI) . এই চুক্তির আওতায় যেই ভ্যাক্সিন এখনই সরবরাহ করার কথা ছিল, ইন্ডিয়া বলছে তারা এখন সেটা মার্চ এপ্রিলের আগে দিতে পারবে না।
কোভ্যাক্সের জয়েন্ট চেয়ারপারসন জেইন হালটন বলেছেন, এই ভ্যাক্সিন জাতিয়াতাবাদ যা অনাকাক্সিক্ষত, তা তারা আগেই ধারণা করতে পেরেছিলেন এমনটা হতে পারে। তাই তারা একাধিক দেশকে এই ভ্যাক্সিন বানানোর জন্যে নিযুক্ত করেছেন। তারা ২ বিলিয়ন ডোজ অন্যান্য দেশ থেকে বানানোর জন্যে চুক্তি করে রেখেছেন, কাজেই স্বল্পোন্নত দেশের জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর জন্যে ইন্ডিয়া চুক্তি ভঙ্গ করলেও তাদের অন্য উপায় খোলা আছে।
এখানে উল্লেখ্য যে অক্সফোর্ড-এস্ট্রজেনেকা ভ্যাক্সিন একটি ‘মুনাফার জন্যে নয়’ ভিত্তিতে তৈরি করা ভ্যাক্সিন। শুধু গরিব এবং স্বল্পউন্নত দেশে দ্রুত পৌঁছে দেয়ার জন্যে তারা মুনাফা ছাড়াই এই ভ্যাক্সিন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইন্ডিয়ার সেরাম ইন্সিটিউট এই চুক্তি মোতাবেক সস্তায় এই ভ্যাক্সিনটি তৈরির ঠিকাদার নিযুক্ত হয়। ভ্যাক্সিন তৈরি হয়ে যাবার পরে এখন তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এই ভ্যাক্সিন অন্য কোন দেশে দিতে পারেব না।
বাংলাদেশের উচিত ‘ভ্যাক্সিন ডিপ্লোম্যাসি’ শুরু করার জন্যে আশু উদ্যোগ নেয়া। সেই সব দেশ অথবা কোম্পানি অন্যান্য ভ্যাক্সিন তৈরি করছে তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা , তাদের বাংলাদেশে ফেইজ-৩ এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল তৈরির সুযোগ করা দেয়া। যেসব দেশ ‘টেকনলজি ট্রান্সফার’ করতে আগ্রহী তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশে সব ধরনের সুযোগ উন্মুক্ত করে দেশে ভ্যাক্সিন তৈরির সক্ষমতা অর্জনের এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড থেকে