আরিফ মাহবুব: বাংলার জনগণ একত্রে বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকারীদের প্রতিহত করবে, জাতীয় ইস্যুতে যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে আর এটা করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের লোকজন উতলা না হলেও চলার কথা। পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত যখন সাংবিধানিক নিয়মের বাইরে এসে জনসম্মুখে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙতে আসা দুষ্কৃতিকারীদের হাত ভেঙে হাজতে ঢুকিয়ে রাখার হুমকি দিচ্ছেন, তখন অবাক হবার মতো কিছুই দেখছি না। প্রশাসনের আমলা থেকে শুরু করে পিওন পর্যন্ত যখন তেলের শিশি নিয়ে দিগ-বিদিগ জ্ঞানহীনভাবে ছুটাছুটিতে ব্যস্ত তখন একজন জেলা সুপারের এ ধরনের বক্তব্য খুবই স্বাভাবিক। একজন পুলিশ কর্মকর্তা কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু ও বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর ইস্যুতে যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে তিনি একজন রাজনীতিবিদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন আর এটিই যদি পুলিশের রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের চেহারা হয় তবে বলতে হয় পুলিশ বাহিনীর নামের আগে দলীয় নামটা জুড়ে দিলেই তো ষোলকলা পূর্ণ হয়ে যায়।
পুলিশের কাজ হচ্ছে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সামাল দেয়া আর সেটাই তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কিন্তু পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকারীদের পাকিস্তানে চলে যাবার হুমকি দিয়ে বসেছেন, প্রশ্ন আসতে পারে পুলিশ তুমি কার? পুলিশ ভাইয়ের বক্তব্যের সমর্থনে দেশের একপাল বুদ্ধিজীবীও তেলের শিশি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন, বুদ্ধিজীবী ভাইদের বক্তব্য হচ্ছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো রাজারবাগের পুলিশ বাহিনী, মনে রাখবনে সেই রাতেই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো আর পাকিস্তানের সংবিধান সেই রাত থেকেই অকার্যকর হয়ে গিয়েছিলো। বর্তমানে বাংলাদেশের একটি সংবিধান প্রায় পঞ্চাশ বছর যাবৎ কার্যকর। এখানে আবারও প্রশ্ন আসে একজন পুলিশ সুপার তার প্রশাসনিক দায়িত্বের বাইরে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতের চেতনা বলে যদি কাউকে হাত পা ভেঙে দেবার হুমকি দিয়ে বসে তবে কি সেটা পুলিশের সাংবিধানিক দায়িত্বের মাঝে পরে কিনা জানার আগ্রহ রইলো। ফেসবুক থেকে