কামরুল হাসান মামুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এইটা নাকি দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। হ্যাঁ, ৮৩ টি বিভাগ, ১২টি ইনস্টিটিউট, ২০টি আবাসিক হল, ৩টা হোস্টেল এবং ৫৬টি গবেষণা সেন্টার আর প্রায় ৩৭ হাজার ছাত্র। সংখ্যার বিচারে যদি বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং হতো তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা যথেষ্ট উপরের দিকে থাকতাম। এতো বড় একটা বিশ্ববিদ্যালয় থাকার পরও করোনা নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা নেই। অথচ আমাদের বায়োকেমিস্ট্রি মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ আছে, আমাদের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিয়োটেকনোলোজি বিভাগ আছে, আমাদের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগ আছে, আমাদের ফার্মাসি বিভাগ আছে। কি নেই? হ্যাঁ, অনেক কিছুই নেই। এইগুলোকে যেভাবে তৈরি করা উচিত ছিলো, যেইভাবে ফান্ডিং করা উচিত ছিলো, যেরকম গবেষক, শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিলো তা দেওয়া হয়নি। আমাদের দেশ এখন গার্মেন্টসের মতো ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি বুমিং। আমরা বিদেশে ওষুধ রপ্তানি করছি। এসব ইন্ডাস্ট্রি এবং আমাদের বিভাগগুলো মিলে অনেক কিছুই করতে পারতো। সাথে যদি সরকারি সহযোগিতা ও আইসিডিআরবি বাংলাদেশের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান মিলে তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু এই করোনা প্যান্ডেমিক নিয়ে আমাদের কোনো কার্যক্রম নেই।
এটা খুবই খারাপ একটা দিক। বিশ^বিদ্যালয় কীভাবে চালু রাখা যায়, কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের অন্তত phase wise রিংব পরীক্ষা নেওয়া যায় সেগুলো নিয়েও কোনো ভাবনা দেখি না। স্কুলগুলো বন্ধ। ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে থেকে কী রকম আছে, কীভাবে আরেকটু ভালো রাখা যায় সেগুলো নিয়েও কোনো গবেষণা নেই। অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্য socialization খুবই জরুরি। আমাদের স্কুলগুলো বন্ধ থাকলেও অল্পস্বল্প অনলাইন ক্লাস হচ্ছে কিন্তু সব স্কুল পারছে না। যারা পারছে সেটাও প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট না। এই যে ছেলেমেয়েরা বাসায় থেকে কম্পিউটার ও মোবাইলে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ গেইমে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে সেটাও দুশ্চিন্তার বিষয়। আমার মতে, স্কুলগুলো ব্যাচ করে অল্টারনেটিভ দিনে ক্লাস করানো যেতো। দুই শিফটেও ক্লাস নেওয়া যেতো। এই করোনায় শিক্ষা ক্ষেত্রে যেই পরিমাণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে সেটার সুদূরপ্রসারী ইমপ্যাক্ট আছে। এগুলো নিয়ে সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তেমন কোনো ভাবনা আছে বলে মনে হচ্ছে না। ফেসবুক থেকে