শিরোনাম
◈ আগামী নির্বাচনে ভোটার আস্থা নিশ্চিতই প্রধান দায়িত্ব: ফেসবুক বার্তায় তারেক রহমান ◈ ফেব্রুয়া‌রির নির্বাচ‌নে জামায়াতে ইসলামী‌কে দিল্লি কোন চোখে দেখবে? ◈ ইসরায়েল খেললে বিশ্বকাপ ফুটবল বয়কট কর‌বে স্পেন ◈ এ‌শিয়া কা‌পে রা‌তে শ্রীলঙ্কা - আফগা‌নিস্তান মু‌খোমু‌খি, লঙ্কান‌দের জয় দেখার অ‌পেক্ষায় বাংলাদেশ  ◈ আওয়মী লীগ বিহীন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে এখন যে সব চিন্তাভাবনা  ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, চেলসিকে হা‌রি‌য়ে বায়ার্ন মিউ‌নি‌খের শুভ সূচনা ◈ কিশোরগঞ্জ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্থগিতাদেশ উঠিয়ে দিন, না হলে ভিন্ন পথ নেবো, জানালেন ফজলুর রহমান ◈ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা ◈ হ‌্যান্ড‌শেক না করায় অপরাধ হিসা‌বে ভারতের ম‌্যাচ ফি ৫০ ভাগ একং ২‌টি ডি‌মে‌রিট প‌য়েন্ট জ‌রিমানা হ‌তে পা‌রে ◈ এআই, কোয়ান্টাম ও নিউক্লিয়ার এনার্জিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বড় চুক্তি

প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০৩ দুপুর
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: চার পত্রিকার সম্পাদক আমার ছোট বোন নাসিমা খান মন্টি, একদিন তাকে নিয়ে গর্ব করবে দেশবাসী

অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী: চারটি পত্রিকার সম্পাদক এখন নাসিমা খান মন্টি। বাহ! বিরাট খবর। অত্যন্ত আনন্দের। সম্মানের। খুবই খুশির। এটা তার জীবনে স্মরণীয় সময়। এই আনন্দের সময়ে তাকে আমি অভিনন্দন জানাই। শুভেচ্ছা এবং শুভকামনাও থাকলো। আমি বিশ্বাস করি, যোগ্যতার ভিত্তিতে চার পত্রিকার সম্পাদক এখন সে। যোগ্যতার প্রমাণ সে পত্রিকার সাফল্যের মাধ্যমে প্রমাণ করবে। সে দিনটি খুব বেশি দূরে নয়।

মন্টির প্রতি আমার স্নেহ-ভালোবাসা সবসময়। আমার কোনো বোন নেই, সে-ই আমার ছোট বোন। মন্টির সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় নাঈমুল ইসলাম খানের স্ত্রী হিসেবে। যখন সে নাঈমুলের সংসারে আসে, তখন থেকে তাকে আমি ছোট বোন হিসেবে দেখি। নাঈমুল ইসলাম খানও আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আমার সঙ্গে তার সর্ম্পক দৃঢ় হয় ভাই হিসেবে। মন্টি সবসময় হাসিমুখে কথা বলে থাকে। তার ব্যাকগ্রাউন্ড আমি জানতাম না। পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় পরিচয়টা আরও বেশি ভালো হয়েছে। গত দুই থেকে তিন বছরে মন্টির অফিসে অনেকবার গিয়েছি এবং তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। নতুন অফিসে এখনো যাওয়া হয়নি। তবে তার সঙ্গে আমার সবসময় যোগাযোগ আছে।

মন্টির আর আমার বাসা প্রায় কাছাকাছি। মন্টি সংবাদিকতা এবং সাংবাদিকদের করণীয় নিয়ে বেশি আলোচনা করে, তার সঙ্গে আলোচনা করে বুঝতে পারলাম, তার বক্তব্য পেশাদারিত্বের বিষয়টি বেশি প্রধান্য পায়। তার দক্ষতা অত্যন্ত বেশি। সে আমাকে সবসময় বড় ভাইয়ের মতো অনেক সম্মান করে। সে বেশির ভাগ সময়ই পত্রিকা নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করে। নাঈমের সঙ্গে আমার এখন তেমন আলাপ হয় না, হয়তো ব্যস্ততার কারণে যোগাযোগটা আগের চেয়ে কম হয় এখন।

কিছুদিন আগে মন্টি বললো, ভাই, আপনি কি করোনার মধ্যে অফিসে যান? উত্তরে আমি বললাম, অফিসে কেন, আমি তো মাঝে মধ্যে তোমাদের বাসায় যাই। আবার দাওয়াত দিলে যাই, না দিলেও যাওয়া হয়। নাঈম ও মন্টি তাদের বাসায় গেলে অনেক আদর-আপায়ন করে, সম্মানের কোনো কমতি থাকে না। সবসময় তাদের বাসায় যাওয়ার জন্য আমাকে বলে।

একদিন মন্টি ফোন করে বললো, ভাই, আমি একদিন আপনার অফিসে আসবো। আমি বললাম, ঠিক আছে চলে এসো। ঠিকই হঠাৎ একদিন মন্টি তার সহকর্মী নিয়ে আমার মহাখালী অফিসে এলো। বিভিন্ন কথাবার্তা, গল্প-গুজব হলো, সবই ভাই-বোন সম্পর্কিত। একটা জনহিতকর বিষয়ও ছিলো। তাকে আশ^স্ত করি। বলি, জনহিতকর কাজে অবশ্যই পাশে থাকবো। সে খুব খুশি হয়। অথচ আমি ভেবেছিলাম, পত্রিকার কোনো বিজ্ঞাপন কিংবা উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবে। করোনার কারণে জনহিতকর কাজটি সম্পূর্ণ হয়নি এখনো। আশা করছি, খুব শিগগিরই সেটা সম্পন্ন হবে।

একজন দক্ষ সম্পাদকের করণীয় কী, তা নিয়ে সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করে মন্টি। আগে তিনটি পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলো, এখন চারটি পত্রিকার সম্পাদক হয়েছে। বাংলাদেশে নারী সম্পাদক হিসেবে এর আগে কেউ এতো বড় দায়িত্ব পালন করেনি। মন্টি এখন এক অন্য উচ্চতায়। কাজ করার জন্য তার আলাদা একটি রোড-ম্যাপ আছে। সব কাজ পরিকল্পিতভাবে করে। দুটি কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছে সে। [১] পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব, [২] অফিস স্টাফদের সঙ্গে সরাসরি পত্রিকার সম্পাদকীয় আলাপ-আলোচনা করা। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে একজন মায়ের দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছে সুচারুভাবে। কোনোদিন কোনোকিছু নিয়ে গাফলতি করে না। যা করবে খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করে।

মন্টি সবসময় মানুষকে সম্মান করে কথা বলে, একজন সম্পাদক হিসেবে সে আরও বেশি বিনয়ী। অন্য সম্পাদকদের মনে একধরনের অহংকার কাজ করে, কিন্তু মন্টির মধ্যে সেটি নেই। সে তার স্টাফদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। যেকোনো বিষয় দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করতে পারে। সবসময় সহকর্মীকে নিজের মতো করে বোঝাতে চেষ্টা করে। এতে তার সাফল্যও ঈর্ষণীয়।

নাসিমা খান মন্টি নাঈমুল ইসলাম খানের সহধর্মিনী, এ কারণে সে কিছুটা অবমূল্যায়িত হয়। নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদপত্র জগতে নতুন ধারা এনেছে। কিংবদন্তি সম্পাদক, সাংবাদিক সে। বাংলাদেশে যতোদিন সংবাদপত্র থাকবে, নাঈমুলের নামটি একলাইন হলেও লিখতে হবে। অন্যথায় সংবাদপত্রের ইতিহাসের প্রতি অন্যায় করা হবে। মন্টি এখন বড় একটা ছায়ার নিচে আছে। তবে একটা বড় গাছের নিচে অন্য একটা গাছ তেমনভাবে বৃদ্ধি পায় না। মন্টি নিজ যোগ্যতায় একের পর এক সফলতা দেখিয়েছে। সাংবাদিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে যেটা সঠিক সেটিই করে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে। কারও সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব নেই। করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও কোনোদিন পত্রিকা প্রিন্টিং বন্ধ থাকেনি। এখন পত্রিকার অবস্থান তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো। সামনে আরও অগ্রসর হবে। এগিয়ে যাবে। এগিয়ে যাওয়ার সব সম্ভাবনাই আছে তাদের।
দেশে মন্টিদের পত্রিকার অনেক পাঠক আছে। টাকা খরচ করে পাঠকেরা অনেক লাভবান। কেননা পত্রিকায় অনেক তথ্যবহুল কনটেন্ট থাকে। যা অন্য পত্রিকায় দেখা যায় না। এটা ঠিক যে তুলনামূলকভাবে অন্যান্য পত্রিকা বিজ্ঞাপনের দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রয়োজন। কিন্তু আমরা তাকে বিজ্ঞাপন প্রাপ্তিতে সেভাবে এখনো সহায়তা করতে পারিনি। যারা সহযোগিতা করতে পারতো তারাও তেমনভাবে এগিয়ে আসছে না। আমি আশা করছি, বিজ্ঞাপনদাতারা তাকে সহযোগিতা করবে।

নাসিমা খান মন্টিকে নিয়ে আমি গর্ববোধ করি। কারণ মন্টি আমার ছোট বোন। সে চারটি পত্রিকার সম্পাদক হয়েছে। এটা কি সহজ কাজ? না। অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কঠিন সে চ্যালেঞ্জটাই সে নিচ্ছে। লড়াই করছে। তার এই লড়াইয়ের মানসিকতা অত্যন্ত আনন্দের। আমি শ্রদ্ধা করি তার এই আগ্রহ-উদ্দীপনা ও উৎসাকে। আমি অত্যন্ত গর্বিত তাকে নিয়ে। যতোদিন বেঁচে থাকবো, ততোদিন মন্টিকে নিয়ে গর্ববোধ করবো। আমি বিশ্বাস করি, তাকে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ একসময় গর্ববোধ করবে। আমি আমার ছোট বোনের দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাকে অতি সুনামের সঙ্গে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সহায়তা করেন।

লেখক পরিচিতি: প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা, আমাদের নতুন সময়

অনুলিখন: মোহাম্মদ হাসান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়