মাসুদ রানা: ইউরোপ যখন মধ্যযুগে অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিলো এবং ধর্মতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্র মিলে জনগণকে ভূমিদাস বানিয়ে শাসন ও শোষণ করতো, তখন তারা তাদের পবিত্র গ্রন্থের বিরোধিতা কিংবা অবমাননা হয়েছে বলে মুক্ত-চিন্তার মানুষকে ধরে ধরে আগুনে পুড়িয়ে মারতো। অবশ্য, ইউরোপে পবিত্রগ্রন্থের বিরোধিতা অভিযোগ তুলে প্রথমে তার বিচার করা হতো, বিচার প্রক্রিয়া অভিযুক্তদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযগ দেওয়া হতো, এবং এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের প্রশ্ন বা বিরোধিতা প্রত্যাহার করে ও অনুতাপ প্রকাশ করে মুক্তিরও সুযোগ দেওয়া হতো।
বাংলাদেশে আজ যা হলো - পবিত্রগ্রন্থ অবমাননার দায়ে প্রথমে প্রহারে মেরে আগুনে ভস্মীভূত করা - তা মধ্যযুগের ইউরোপীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। মানবতা-বিরোধী ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থ যতো পবিত্র প্রত্যক্ষিতই হোক না কেনো, তার আবেদন হারাতে বাধ্য। পরিশেষে, বাঙালী মুসলিম কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলি ঃ “মানুষেরে ঘৃণা করি/ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি!/ও’ মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে/যাহারা আনিল গ্রন্থ-কিতাব সেই মানুষেরে মেরে।/পূজিছে গ্রন্থ ভণ্ডের দল! -মূর্খরা সব শোনো, মানুষ এনেছে গ্রন্থ;- গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।”
২৯/১০/২০২০। লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড
ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :