সাদিয়া নাসরিন: মধ্যবয়সে এসে, যে বয়সে একটু বড় হতে হয়, একটু গভীর হতে হয়, সেই বয়সে এসে যদি বইপত্র পড়া মানুষজন, নিজের আইডেন্টিটি তৈরী করা মানুষজন, ভিষণ রকমের উন্নাসিকতায় ভোগে, কারণে অকারণে কাউকে না কাউকে পোক করতে থাকে, পিঞ্চ করতে থাকে, তাচ্ছিল্য করতে থাকে, ট্রোল করে বিকৃত আনন্দ পেতে থাকে, তখন বুঝে নিতে হয় মানুষটা ভয়ংকর কোন মানসিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
সেই সংকটের উৎস হতে পারে মধ্যবয়সের আবেগ ও একাকীত্ব, হতে পারে নিজের ভেতরে বাড়তে থাকা দ্বৈত ব্যক্তিত্বের সংঘাত, হতে পারে নিজেকে প্রমাণ করতে না পারার গ্লানি, হতে পারে অন্যের সুবিধাভোগী হয়ে নিজের জীবনের 'অপচয়' দেখার যন্ত্রণা, হতে পারে নিজের উপর সীমাহীন অসম্মান।
কারন যাই হোক না কেন, ফলাফল একটাই। তা হলো নিজের প্রতি অবিশ্বাস, অনাস্থা। এই জগতে যতো রকমের যন্ত্রণা মানুষ পায়, তার মধ্যে নিজেকে অবিশ্বাস করার মতো যন্ত্রণা আর একটিও নেই।এই যন্ত্রণার কথা কাউকে বলা যায়না। নিজেকে বিশ্বাস করতে না পারলে মানুষ কোনদিনই নিজের প্রতি সুবিচার করতে পারেনা।
অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে এসেছি বলেই আমি এই যন্ত্রণাকে জানি। বুঝি বলেই, স্বপ্ন আর সাহসের সমন্বয় করতে না পারা এই নিরুপায় মানুষগুলোর উপর আমার কখনো রাগ হয়না। শত ছোবল খেয়েও আমি তাই তাদের হাত ছেড়ে দেইনা। তাদের সমব্যথীই হই শেষ পর্যন্ত।
সামান্য জাগতিক সুবিধা আর আরামের লোভে নিজের সম্মান বিসর্জন দেয়া, নিজেকে নিজের ভাবতে না পারা, নিজের নি:শ্বাসের উপর নিজের দাবী রাখতে না পারা মানুষদের উপর আসলে রাগ করা চলেনা। বরং সুযোগ পেলে ভালোবেসে, তাদের সংকট উত্তরণে সাহায্য করতে হয়, হাত ধরে জীবনের পথ চিনিয়ে দিতে হয়।
এটাই এগিয়ে থাকা মানুষের ধর্ম। ফেসবুক থেকে