রাজু চৌধুরী: [২] চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রায় ৬০ লাখ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে এই জোন প্রক্রিয়া রোববার থেকে বাস্তবায়িত হল। যার ফলে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৬০ লক্ষ সেবাপ্রার্থী সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে এমনটি বলেছেন চসিকের কর্মকর্তারা।
[৩] বিশেষ করে সেবাপ্রার্থী মানুষের দূর্ভোগ কমাতে চসিকের প্রশাসনিক জোনে এমন বিভক্তি বা বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। নগরের ৪১ ওয়ার্ডকে এই ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করার ফলে প্রতিটি অঞ্চলের আওতায় আলাদা আলাদা প্রকৌশল, স্বাস্থ্য, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব ও প্রশাসন শাখা থাকবে। ছয়জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্চলগুলোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
[৪] এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব আঞ্চলিক কার্যালয়ের একজন প্রধান নির্বাহী আফিয়া খানমকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি রোববার থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। পর্যায়ক্রমে আরো ৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে বলে চসিক সূত্রে জানা গেছে।
[৫] জানা গেছে, প্রতিটি আঞ্চলিক অফিস থেকে প্রশাসনিক কাজ, হিসাব রক্ষণ, জোনের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, সমাজকল্যাণ, পূর্তকাজ ও রক্ষণাবেক্ষণ, বৈদ্যুতিক কাজ ও রক্ষণাবেক্ষণ, বস্তিবাসীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, আত্মকর্মসংস্থানে সহায়তা প্রদান ও প্রশিক্ষণের দেওয়া কথা রয়েছে। প্রত্যেক আঞ্চলিক অফিসে একজন প্রধান থাকবেন এবং কেন্দ্রীয় সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয় করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
[৬] এক সূত্র জানায়, ১৯৮৮ সালে সরকার চসিককে ৩ হাজার ১৮০টি সাংগঠনিক পদের অনুমোদন দেয়। কিন্তু চাকরির প্রবিধানমালা অনুমোদন না হওয়ায় দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় কোনো নিয়োগ ও পদোন্নতি দিতে পারেনি সংস্থাটি। ফলে অতিরিক্ত দায়িত্ব ও চলতি দায়িত্ব দিয়ে কাজ সেরে এসেছে সংস্থাটি। সর্বশেষ গত বছরের ১১ জুলাই ১৯৮৮ সালের অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামোর চাকরির বিধিমালার অনুমোদন হয়। ফলে এখন নিয়োগ বা পদোন্নতিতে কোনো ধরনের আইনগত জটিলতা নেই।
[৭] চসিক সূত্রে আরো জানা গেছে, সেবা প্রার্থীরা নিকটস্থ আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো থেকেই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এর আগে ২০১২ সালে ২০ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে চসিকের ওয়ার্ডগুলোকে অঞ্চলভিত্তিক ভাগ করেছিল। তবে গত প্রায় ৮ বছরেও তা কার্যকর হয়নি। সর্বশেষ গত ৫ অগাস্ট পুরাতন পরিষদ বিলুপ্ত এবং চসিকে প্রশাসক নিয়োগের পর নাগরিক সেবা নিশ্চিতে অঞ্চল গঠনের বিষয়টি সামনে আসে। এক্ষেত্রে কাউন্সিলর না থাকার বিষয়টিকেই আমলে নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো দাপ্তরিক পত্রে বলা হয়েছে, প্রশাসক নিয়োগের সাথে সাথেই পুরাতন পরিষদ বিলুপ্ত হয়েছে বিধায় বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনে কাউন্সিলর না থাকায় ওয়ারিশান সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ প্রদানসহ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সচল রাখার লক্ষ্য আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ জরুরি।
[৮] খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আঞ্চলিক কার্যালয়ের অবকাঠামো স্থাপনে ২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল চসিকের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান প্রকৌশলীকে। তবে মন্ত্রণালয় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়ায় তার অগ্রগতি হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল সিটি কর্পোরেশনে ১ হাজার ৪৬টি নতুন পদ সৃষ্টির অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়। সেখানে ছয় অঞ্চলের বিপরীতে ৪৭৩টি পদ সৃজন করা হয়। কিন্তু অনুমেদিত নিয়োগবিধি না থাকায় পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ