শিরোনাম
◈ অর্থের বিনিময়ে ৬ বছরের শিশুকে বিয়ে: তালেবান প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আপাতত রক্ষা! ◈ আবারও মে‌সির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামির জয় ◈ এখন থেকে আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নাম থাকবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ ‘তুমি কেন ফুয়েল কেটে দিলে?’ ভারতীয় বিমান বিধ্বস্তের আগে পাইলটদের শেষ ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং ◈ দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর: মৃত্যু হলে লাশ দেশে পাঠাবে সরকার, ক্ষতিপূরণ মিলবে বীমার আওতায় (ভিডিও) ◈ বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত: পিউ রিসার্চ ◈ বেপরোয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ছয় মাসে নিহত ৪৩ ◈ স্প‌্যা‌নিশ ক্যাবরেরাই থাক‌ছেন বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের কোচ ◈ সন্ধ‌্যায় নেপালের বিরু‌দ্ধে লড়াই‌য়ে নাম‌ছে বাংলা‌দে‌শের মে‌য়েরা ◈ ঢাকায় হবে এশিয়া কাপের সভা, ভারত অংশ নে‌বে না

প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর, ২০২০, ০৫:৪৫ সকাল
আপডেট : ০২ অক্টোবর, ২০২০, ০৫:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পৃথিবীতে ‘নরকের দরজা’, জ্বলছে ৫০ বছর ধরে!

অনলাইন ডেস্ক: জন্ম থেকেই নরকের কথা শুনে আসছি আমরা। তবে সেখানে যেতে চাই না কেউই। কারণ নরকে গিয়ে মানুষ নাকি পাপের শাস্তি পায়। তাই নরকের দরজার ত্রিসীমানায় যাওয়ার বিন্দুমাত্র বাসনা নেই কারও। কিন্তু আপনি যদি ভূপর্যটক হন, সম্ভব হলে নরকের দরজায় অবশ্যই একবার যাবেন। হলফ করে বলা যায়, নরকের দরজার কাছে গিয়ে, আপনি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যাবেন। তবে এ নরকের দরজা, সে নরকের দরজা নয়। এখানে নরকযন্ত্রণা নেই, আছে অপার বিস্ময় ও সীমাহীন মুগ্ধতা।বাংলাদেশ প্রতিদিন

মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তান। এই তুর্কমেনিস্তান একসময় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গ। তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাত থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে আছে দারভাজা গ্রাম। খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত দারভাজা এলাকায় ১৯৭১ সালে রাশিয়ার অনুসন্ধানকারীরা আবিষ্কার করেছিলেন একটি খনি।

অনুসন্ধানকারীরা প্রথমে ভেবেছিলেন, এই খনি থেকে পাওয়া যাবে খনিজ তেল। তাই তেল তোলার জন্য আনা হয়েছিল বিশাল বিশাল ড্রিল মেশিন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল, ড্রিল করলেই বেরিয়ে আসছে বিষাক্ত গ্যাস। জানা গিয়েছিল খনিটি খনিজ তেলের নয়, এটি আসলে প্রাকৃতিক গ্যাসের খনি।

ড্রিল করার সময় একটি বিশাল এলাকাজুড়ে নেমেছিল ধস। তৈরি হয়েছিল, ২২৬ ফুট ব্যাস ও ৯৮ ফুট গভীরতা যুক্ত এক বিশাল গহবর। প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত গ্যাস বের হতে শুরু করেছিল গহবরটি থেকে। গবেষণা থেকে জানা গিয়েছিল, গ্যাসটি হল ‘মিথেন’।

খনি থেকে বেরিয়ে আসা গ্যাসের বিষক্রিয়ায় মারা যেতে শুরু করেছিল পশুপাখি। মৃত্যুভয়ে পালাতে শুরু করেছিলেন দারভাজা গ্রামের মানুষ। চিন্তায় পড়েছিল খনি কর্তৃপক্ষ। গ্যাস নির্গমণের পথ কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছিল না।

পশুপাখি, কীটপতঙ্গ, স্থানীয় মানুষ ও পরিবেশকে বাঁচাতে এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভূতত্ত্ববিদ ও বিজ্ঞানীরা। আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন বিশাল গহবরটি থেকে বেরিয়ে আসা মিথেন গ্যাসে।

দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করেছিল বিশাল গহবর থেকে বেরিয়ে আসা কোটি কোটি ঘনফুটের গ্যাস। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন খনিতে থাকা গ্যাস কিছুদিনের মধ্যেই পুড়ে শেষ হয়ে যাবে। নিভে যাবে আগুন। বেঁচে যাবে পরিবেশ।

কিন্তু মেলেনি বিজ্ঞানীদের হিসাব। আজও নেভেনি খনির আগুন। জ্বলে চলেছে প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে। সেই ১৯৭১ সাল থেকে। যেদিন খনিটির প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার ফুরাবে, সেদিন নিভে যাবে আগুন। তবে সেটা কবে, তা জানাতে পারেননি ভূতত্ত্ববিদ ও বিজ্ঞানীরা।

এই জ্বলন্ত খনিটি আজ হয়ে উঠছে তুর্কমেনিস্তানের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। কারাকুম মরুভূমিতে প্রতিবছর ট্রেকিং ও ক্যাম্পিং করতে আসা হাজার হাজার পর্যটক, ভিড় করেন খনিটি দেখবার জন্য। তারাই খনিটির নাম দিয়েছেন ‘নরকের দরজা’।

তবে নরকের দরজার প্রকৃত রূপ দেখতে হলে যেতে হবে রাতে অন্ধকারে। রাতে অনেক দূর থেকে দেখা যায় নরকের দরজার রক্তিম আভা। মিশকাল রাতের পটভূমিকায় খনিটির কাছে গিয়ে দাঁড়ালে মনে হবে চলে এসেছেন পৃথিবীর বাইরে।

তবে খুব কাছে যাওয়া যায় না এবং কাছে গিয়ে ১০/১২ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকা যায় না, উত্তাপের কারণে। তাই বুঝি কোনও রসিক পর্যটক এই বিশাল জ্বলন্ত গহবরটির নাম দিয়েছিলেন ‘শয়তানের সুইমিংপুল’।

তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাদের ইন্টারন্যাশনাল বাস স্ট্যান্ড থেকে ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি বা বাসে করে তিন ঘণ্টায় যাওয়া যায় দারভাজা বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে সাত কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বা সরাসরি গাড়িতেই গেলে পাওয়া যাবে নরকের দরজা। রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে থাকতে হবে তাঁবুতে। সে ব্যবস্থা করে দেবে স্থানীয় গাইডই। তবে নিশ্চিন্ত থাকুন, রাতটা নরকে নয়, স্বর্গেই কাটাবেন আপনি। সূত্র: দ্য ওয়াল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়