তপু সরকার: [২] শেরপুরের প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ব্রহ্মপুত্র নদে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্রহ্মপুত্র নদের নকলা চরঅষ্টধর ইউনিয়নের অংশে নারায়নখোলা ঘাট থেকে ওই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়ন ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন বাসীর যৌথ আয়োজনে ওই নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
[৩] উপজেলার চন্দ্রকোনা, চরঅষ্টধর ও পাঠাকাটা ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের নারায়নখোলা এলাকায় শুক্রবার দুপুর হতে সন্ধা পর্যন্ত ওই প্রতিযোগিতা চলে। পার্শ্ববর্তী জেলা জামালপুর ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ৪টি দৌঁড়ের নৌকা ও ৩ পইডা নৌকা ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
[৪] প্রথম রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয় দধিয়ারচর এলাকার পঙ্খীরাজ নামের নৌকা ও চরবাছুরআলগী এলাকার টাইগার নামের নৌকার মধ্যে, এতে টাইগার দৌড়ে প্রথম হয়, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে পঙ্খীরাজ। দ্বিতীয় রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয় মানিকারচর এলাকার মামা-ভাগ্নে নামের নৌকা ও হনুমানেরচর এলাকার ঘূর্ণিঝড় নামের নৌকার মধ্যে, এতে মামা-ভাগ্নে প্রথম হয়, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ঘূর্ণিঝড়। সর্বশেষে চরবাছুরআলগী এলাকার টাইগার ও মানিকারচর এলাকার মামা-ভাগ্নে নৌকার মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা হয়। এতে চরবাছুরআলগীর টাইগার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে, আর রানার্স হয় মানিকারচর এলাকার মামা-ভাগ্নে নামের নৌকা।
[৫] পরে আমন্ত্রিত অতিথিরা চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হওয়া নৌকার বাইছা ও দলনেতার হাতে পুরস্কার তুলেদেন। তাছাড়া এ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনকারী সকল নৌকার দলনেতার হাতে পুরষ্কার তুলে দেন নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দরা।
[৬] চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের মো. মোহাম্মেল হোসেন রাজীবের সার্বিক তত্বাবধানে অনুষ্ঠিত নৌকা দৌড় প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন
[৭] প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চরঅষ্টধর ইউনিয়নের এনামুল হক এবং ছিয়াবুল হক বাদশা, ও মুখলেছুর রহমান খানসহ ইউনিয়ন ইউপি সদস্য, নারায়ন খোলা ও শিকদারপাড়া ঘাটের ইজারাদারসহ এলাকার গণ্যমান্যদের সমন্বয়ে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও স্বেচ্ছাসেবকরা নিরলস পরিশ্রম করেন।
[৮] নেতাকর্মী, বিভিন্ন বয়সী হাজারো উৎসুক নারী-পুরুষ নদের দুই তীরে দাড়িঁয়ে এবং কাছে থেকে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে ভাড়া করা ছোট-বড় অর্ধশতাধিক ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে দর্শকরা নদকে যেন একটি নতুন চিত্রে সাজিয়েছিলেন। দুপুর হতে না হতেই নদের তীরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন বয়সী হাজারো নারী-পুরুষ উৎসুক দর্শকের মিলন মেলায় পরিণত হয়। বিশেষ করেন নৌকাবাইচ চলাকালে বাইছাদের শ্লোগমাখা প্রাণ জুড়ানো জাড়িগান সকলের মন কেড়ে নেয়। সম্পাদনা: সাদেক আলী
আপনার মতামত লিখুন :