শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৯:০২ সকাল
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ০৯:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: আহত নারী কর্মকর্তা এবং ভেঙে পড়া সমাজচিত্র

কাকন রেজা: একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। আহত হয়েছেন ওই কর্মকর্তার বাবাও। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই শাস্তি চেয়েছেন দোষীদের। প্রশ্ন তোলা ও শাস্তি দাবি দুটোই সঙ্গত বরং এমনটা না হওয়া কাপুরুষতা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এমন পরিস্থিতি কি একদিনেই তৈরি হয়েছে? হয়নি। সামাজিক শৃংখলা যে ভেঙে পড়ছে তা অনেকদিন আগে থেকেই আমাদের মতন কিছু মানুষেরা বলে আসছিলেন। অনেকে হয়তো অতোটা গা করেননি; নিজের ঘরে আগুন না লাগলে তার তাপটা বোঝা যায় না বলে। এখন তেমনরা ফেসবুক, টুইটারে সক্রিয় হয়েছেন। অথচ সাধারণ নাগরিকের বেলায় তারা ছিলেন চুপচাপ। অন্যায়কে অন্যায় বলতে কোনো বিধি নিষেধ রয়েছে কিনা জানি না। সাধারণ নাগরিকের ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় তাদের কাউকেই কোনো মাধ্যমে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।

খাদিজা চ্যাপ্টার আমরা প্রায় ভুলতে বসেছি। তাকেও কোপানো হয়েছিল। কিন্তু তখন ব্যতিক্রম বাদে কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে শাস্তি ও বিচার দাবি করতে শুনিনি। কারণ খাদিজা সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন না, তার পিতাও নন। এই যে দাবির বিভাজন এটাই ক্রমাগত সামাজিক স্খলনের মূল কারণ। বিভাজিত সমাজ কখনো সভ্য হতে পারে না, এটা স্বীকৃত কথা। যেখানে যতো বিভাজন সেখানে ততো বিশৃঙ্খলা। আমরাও সেই শৃঙ্খলাহীনতার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছি।

সামাজিক অন্যায় হোক কিংবা রাষ্ট্রীয়, তার সবই অন্যায়ই। সে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা অবশ্যই সঙ্গত। যুক্তরাষ্ট্রে একজন কান্ট্রি শেরিফ তার কাজে নাক না গলাতে স্বয়ং প্রেসিডেন্টকে বলতে পারেন। বলতে পারেন, ‘আমাকে আমার কাজ করতে দিন।’ গণতন্ত্রের সৌন্দর্যটাই এখানে। কেউ কি দেখাতে পারবেন আইন অন্যায়ের প্রতিবাদ করাকে নিষেধ করেছে, সে যে কেউ হোক? পারবেন না। বিচার চাওয়াটাও প্রতিবাদের একটা ধরন। দৃশ্যমান যে সব অন্যায়, হত্যা-খুন-ধর্ষণ কিংবা হত্যা প্রচেষ্টা-নির্যাতন-লাঞ্ছনা এ সবই প্রতিবাদযোগ্য।

যে মহিলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহত করা হলো সেটা তেমনি এক অন্যায়। যার প্রতিবাদ করা নাগরিক কর্তব্যের অংশ। সরকারি কর্মকর্তা শুধু নয় একজন সাধারণ নাগরিকের এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত। অথচ বিভাজিত সমাজে প্রতিবাদও বিভাজিত হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা প্রতিবাদ করবেন। সাধারণ মানুষ নিহত হলে, নির্যাতিত হলে প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের মুখ খোলার সুযোগ নেই। কেন নেই, তার কোনো লজিক্যাল উত্তরও নেই। এই যে উত্তর না থাকার ব্যাপারটি তা আপাত জটিল মনে হলেও রাষ্ট্র প্রশ্নে বিষয়টি ততোটা জটিল নয়। রাষ্ট্র গঠনের মূল চিন্তাটা ছিলো নাগরিক নিরাপত্তা। আদিম সমাজে যখন রাষ্ট্র ধারণাটাই ছিলো না তখনও মানুষের অন্ন,বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা ছিলো। মানুষ এসব অধিকারের কথা চিন্তা করে রাষ্ট্র গঠন করেনি। রাষ্ট্র গঠনের মূল চিন্তাটাই ছিলো নাগরিক নিরাপত্তা। বেঁচে থাকা এবং অন্যায়ের বিচার এ দুটো উপকরণ রাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তার প্রতিবাদ করাটা কারো জন্যই অসঙ্গত নয়। এখানে বিভাজন করা হলে কিংবা অসঙ্গত বলা হলে তা কোনোভাবেই রাষ্ট্র চিন্তা বা ব্যবস্থার সাথে যায় না। যেতে পারে না। সুতরাং কোনো অন্যায়ই যেন বিনা প্রতিবাদে না যায়।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়